1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নে রাবি শিবির সভাপতির ৩ প্রস্তাব ঠাকুরগাঁওয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভা জামালপুরে মির্জা আজম সহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের বৈষম্যবিরোধী হামলা মামলায় নড়াইলে আ’লীগের সভাপতিকে কারাগারে প্রেরণ ক্ষেত থেকে আনা কৃষকের পণ্য সুলভ মুল্যে জনগণের মাঝে বিক্রির জন্য পঞ্চগড়ে ন্যায্য মুল্যের বাজারের উদ্বোধন করা হয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যাওয়ার ট্রাভেল পাস যেইভাবে পাবেন বেরোবিতে ” গ্রিন ক্যাম্পাস ক্লিন ক্যাম্পাস” কর্মসূচি পালিত বর্ণিল আয়োজনে ফরিদগঞ্জে বিউটিফুল ধানুয়ার ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন এগার কলেজে নতুন অধ্যক্ষ উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন: উপাচার্য

চিরিরবন্দরে আজও ব্যবহার হচ্ছে কালের গর্ভে বিলীন ইঁদারা বা ইন্দারা

আফছার আলী খান
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ২৫৪ বার পড়া হয়েছে
এক সময় মানুষের পানের জন্য সুপেয় পানির উৎস ছিল বিলুপ্ত হওয়া প্রাচীন ঐতিহ্যগুলোর মধ্যে ইঁদারা বা ইন্দারা বা কুয়া। বিকালে কিংবা সন্ধ্যায় গ্রামবাংলার মা-বোনেরা কলসি নিয়ে কুয়া থেকে পানি নিয়ে আসার চিত্র এখন আর দেখা যায় না। ইঁদারা, ইন্দিরা, ইন্দ্রা, কূপ ও পাতকুয়া-ই ছিল গ্রামের মানুষের সুপেয় বা খাবার পানির সবচেয়ে ভালো মাধ্যম। ১০-১৫ ফুট গোল গর্ত করে অনন্ত ৫০-৬০ ফুট নিচ পর্যন্ত মাটি খুড়ে এসব ইঁদারা, ইন্দিরা, ইন্দ্রা, কূপ ও পাতকুয়া তৈরি করা হতো। মাটির নিচের ঝর্ণা ছিল এসব কূপের পানির প্রধান উৎস। ইঁদারা নিচ থেকে উপর পর্যন্ত ইট বা রিং (সিমেন্ট-বালুর তৈরি গোলাকার কাঠামো) দিয়ে বাঁধাই করা হতো আর কূপ বাঁধাই করা হতো না। নব্বইর দশক পর্যন্ত অনেক এলাকার মানুষ তাদের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ করতো গভীর কূপ বা ইঁদারা থেকে। এসব কুয়া বা ইঁদারার পানি হতো স্বচ্ছ ও ঠান্ডা। সুপেয় পানি পানের অভাববোধ থেকেই মানুষ খনন করতো গভীর কুয়া বা ইঁদারা বা ইন্দারা। খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর থেকে সংগৃহিত পানি দিয়ে ঘর-গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় কাজ করতো। গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কুয়াগুলো কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। যা এখন শুধুই স্মৃতি। এখন আর বাড়ি বাড়ি কুয়া দেখতে পাওয়া যায় না। কিছুদিন পূর্বে যে বাড়িতে কুয়া বা ইঁদারা ছিল সেই বাড়িতে এখন রয়েছে নলকুপ। আবার অনেক বাড়িতে ইলেকট্রিক মর্টার দিয়ে পানি উত্তোলন করা হয়। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষ অনেক দূর এগিয়েছে। শহরাঞ্চলে এখন নলকুপ বা টিউবওয়েল পাওয়া যায় না। সবস্থানেই বৈদ্যুতিক মেশিনের সাহায্যে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে, হারিয়ে গেছে প্রকৃতির সান্নিধ্য। পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ব্যবহার করছি কত রকমের নামি-দামি কোম্পানির ফিল্টার কিংবা পানি বিশুদ্ধ করছি ফুটিয়ে। অথচ নব্বই দশক পর্যন্ত কুয়ার বা চুয়ার পানিরর ব্যবহার ছিল সবর্ত্রই। যা ছিল সম্পূর্ণরুপে বিশুদ্ধ।
এমনি একটি কালের স্বাক্ষী বিলুপ্ত প্রায় ইন্দারা বা ইদারা বা ইন্দারার সন্ধান মিলেছে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নওখৈর গ্রামে। যার নিচে চতুর্দিকে প্লাস্টার করা। যা আজও ব্যবহার হচ্ছে। এলাকার লোকজনের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানোর জন্য এটি পাকিস্তান শাসনামলে নির্মাণ করেন মরহুম ছমিরউদ্দিন শাহ্। এখনো এই ইঁদারা বা ইন্দারার পানি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় তোজাম্মেল হোসেন (৬০) বলেন, বোধগম্য হওয়ার পর থেকেই আমি এ ইঁদারাটি দেখে আসছি। এর গভীরতা অনেক। এর পানি বেশ ঠান্ডা ও স্বচ্ছ। এক সময় এলাকার সবাই এ ইঁদারার পানি পান করতাম। এ ইঁদারার পানি সহজেই পাওয়া যায়। আগে পানির স্তর ভূগর্ভের নিচে নেমে গেলে আমাদেরকে এ ইঁদারার ওপরই নির্ভর করতে হতো।
মহচনা বেগম (৫৫) জানান, এ এলাকায় বিয়ে হওয়ার পর থেকেই আমি ইঁদারাটি দেখে আসছি। আগে এর পানি সকলেই খাইতাম। এখন আর খাই (পান করি) না। আমাদের ছেলেদের বাড়িতে টিবল-মর্টার (টিউবওয়েল) আছে সেগুলা দিয়া পানি উঠিয়া (তুলে) খাই।
ফুলমতি বেগম (৩৭) ও হাফেজা বেগম (৩৫) জানান, এই ইঁন্দিরার পানি সারাবছরই ব্যবহার করা হয়।এর পানি দিয়ে অনেকেই ওযু করেন। অনেকেই পরিবারের কাপড়-বিছানাপত্র, থালা-বাসন ধোঁয়াসহ গোসল করেন। তারা আরো জানান, অনেক সময় ইঁদারা থেকে পানি তুলতে গিয়ে রশি ছিঁড়ে বালতি পানির নিচে তলিয়ে যায়। তখন কষ্ট করে ইঁদারার নিচ থেকে লোহার কাঁকড়া (লাঙ্গলের ফলা সদৃশ্য) দিয়ে বালতি তুলতে হয়।
মমিনুল ইসলাম (৩৬) বলেন, আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। ইঁদারা থেকে পানি তুলতে কোনো কষ্ট হয় না। প্রতিদিন আমরা এর পানি দিয়ে গাঁও (গোসল) ও ধাত-মুখ ধুই। বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা এভাবে দড়ি-বালতি দিয়া পানি তুলি।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com