কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এডহক কমিটি গঠনকে ঘিরে অনিয়ম ও বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শত শত অভিভাবকের স্বাক্ষর সম্বলিত সুপারিশ উপেক্ষা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কমিটির অনুমোদন স্থগিত করেছে। প্রধান শিক্ষক আসাদ মিয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা, ২০২৪–এর প্রবিধি ৬৪ (৩)–এর আওতায় এডহক কমিটি অনুমোদনের জন্য বোর্ডে আবেদন করেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, তিনি স্থানীয় জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এককভাবে সভাপতি প্রার্থীদের তালিকা বোর্ডে পাঠান। এ তালিকায় মনোনীত তিনজন প্রার্থী— আব্দুস সালাম মুন্সী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুল্লাহ, একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক দিলোয়ার হোসেন, বড়চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তরিফ আহমেদ। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (বিদ্যালয়) জনাব দেবেশ চন্দ্র সরকার স্বাক্ষরিত ২৯/০১/২০১৪ তারিখের এক অফিস আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়: “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকের চাকরি বদলিযোগ্য এবং তাদের নিজ বিদ্যালয়ে নানা প্রশাসনিক ও একাডেমিক দায়িত্ব রয়েছে। তদুপরি, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর পরিপন্থীভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সমীচীন নয়।” তথাপি এই বিধান লঙ্ঘন করে তিনজন প্রাথমিক শিক্ষককে মনোনয়ন দেওয়া হয়। স্থানীয় অভিভাবক মোঃ নয়ন মিয়া এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করলে শিক্ষা বোর্ড তদন্ত শুরু করে এবং ৭ মে ২০২৫ তারিখে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির অনুমোদন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জাফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামতকেও উপেক্ষা করা হয়েছে। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন। স্থানীয় একজন অভিভাবক মোহাম্মদ আমানুল্লাহ রতন বলেন, “আমরা স্থানীয়ভাবে অনেকেই স্বাক্ষর করে নয়ন মিয়াকে সভাপতি হিসেবে সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেই প্রস্তাব গোপন করেছেন।” এ বিষয়ে বোর্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “কমিটিতে বিধিবিরুদ্ধভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”