ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানায় দুস্কৃতিকারীদের হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে কলেজ ছাত্র ইমন (১৮) নিহতের ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক দুই মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও আহসানুল ইসলাম টিটু এবং সাবেক ৭ এমপি খান আহমেদ শুভ, তানভীর হাসান ছোট মনির, হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, ছানোয়ার হোসেন, জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, আমানুর রহমান খান রানা, অনুপম শাজাহান জয়কে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান তোফা ও কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ আরো ১৪৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০/৫০০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
নিহত ইমনের ভাই সুমন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মির্জাপুর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত ইমন গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন মন্ডল বাড়ী এলাকার জুলহাস মিয়ার ছেলে। তিনি অলোয়া মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে বিগত ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করে হেমনগর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত (৪ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই হাইওয়ে থানায় একদল দুস্কৃতিকারী হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ওই স্থানে মহাসড়কের উপর শান্তিপুর্ণ সমাবেশ করছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুস্কৃতিকারীরা থানা ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
পুলিশের সাথে দুস্কৃতিকারীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ইমন পেটে গুলিবিদ্ধ হন। আহতবস্থায় প্রথমে তাকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পরে টাঙ্গাইল সদর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত রবিবার (১৮ আগস্ট) ভোরে সে মারা যায়।
এ মামলার অন্য উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন- টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল ইসলাম আলমগীর, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনির, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরন, সাইফুজ্জামান খান সোহেল, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিটন, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভর ব্যক্তিগত সহকারী মীর আসিফ অনিক, মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক সেতাব মাহমুদ, গোড়াই ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর, উয়ার্শী ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মল্লিক, আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের শিকদার, আনাইতারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল, ফতেপুর ইউনিয়র আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও ভাওড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন।এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) নিহত ইমনের ভাই সুমন বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় ১৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০০/৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।