ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় একাধিকবার সংঘবদ্ধ হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, অপহরণের চেষ্টা এবং চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন সাংবাদিকসহ কয়েকজন স্থানীয় ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি হলেও, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে অভিযুক্তরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক মো. মাসুদ রানা ও মো. আব্দুল হালিম লিখিত বক্তব্যে জানান, কোনো অপরাধে জড়িত না থাকলেও তারা বারবার শারীরিক নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়ছেন। এতে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাধীনতা ও স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ২৮ ডিসেম্বরের একটি ঘটনার পর অভিযুক্ত মো. মাসুদ রানা ওরফে নিশান ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি আর চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা মাদক দিয়ে ফাঁসানোর মতো কর্মকাণ্ডে জড়াবেন না। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পুনরায় একই ধরণের অপরাধে লিপ্ত হন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত ৩ জুলাই বিকেলে একটি সংঘবদ্ধ দল তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে এবং হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় রাণীশংকৈল থানায় জি আর মামলা নং ১১৭/২৫ দায়ের করা হয়। এছাড়া ১০ জুলাই সাংবাদিক মো. মাসুদ রানা নিজের প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (নং ৪৬১) করেন। একইসাথে ৯ জুলাই চাঁদা দাবি ও সশস্ত্র হামলার ঘটনায় সি আর মামলা নং ২৫৭/২৫ দায়ের হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ও অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল ফোনে নিয়মিত হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে এক সাংবাদিকের ৬ বছরের সন্তানকে অপহরণ করে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত ১। মো. আশরাফুল, (৫০) ২। মো. খায়রুল (৪৫)
৩। মো. আব্দুল্লাহ (২৬) ৪। মো. মাসুদ রানা ওরফে নিশান (৩০) ৫। মো. ওমর ফারুক (২৮) ৬। মো. জুয়েল (২৬) দ্রুত গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধ এবং সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রকে স্থায়ীভাবে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তাদের অভিযোগ, সাংবাদিকরা দুর্নীতি ও অপরাধের মুখোশ উন্মোচন করলে দুর্বৃত্তরা তা সহ্য করতে পারে না এবং বিভিন্ন উপায়ে তাদের চুপ করানোর চেষ্টা করে। তারা বিশ্বাস করেন সচেতন নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম পাশে থাকলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।