বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো জেলা পুলিশ। প্রতিটি জেলার নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ বিভাগ যে ভূমিকা পালন করে, তা অনস্বীকার্য। সেই ধারাবাহিকতায়, নরসিংদী জেলা পুলিশ আজ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে, যার কৃতিত্বের মূলে আছেন বর্তমান পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান।
জেলার ছয় থানার ওসি ও একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সুপার নরসিংদীতে আসার পর আমাদের দায়িত্ব পালনের পরিধি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। অপরাধ সংক্রান্ত কোনো ক্ষেত্রেই তিনি ছাড় দিচ্ছেন না। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা আমাদের অপরাধ দমনে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন, ফোনে যোগাযোগ রাখেন এবং অপরাধ সংঘটিত এলাকায় দ্রুত আমাদের পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। চিরুনি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে পুরো জেলাজুড়ে অপরাধ নির্মূলে কাজ চলছে।
তারা আরও জানান, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযানে ১৬৩ কেজি গাঁজা ও ৮৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর ফলে মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধ কমে এসেছে এবং যুবসমাজের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও এক বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই পদক্ষেপ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রমাণ বহন করে।
তিনি পুলিশ প্রশাসনে প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্ভাবনী ভূমিকা রেখেছেন। সিসিটিভি মনিটরিং, মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক অভিযোগ গ্রহণ, ডিজিটাল রেকর্ড সংরক্ষণ ও অনলাইন সেবা চালু করে নরসিংদী জেলা পুলিশকে একটি মডেল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তিনি শুধু অপরাধ দমনেই নয়, সামাজিক সচেতনতায়ও গুরুত্ব দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাদক, ইভটিজিং ও সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, র্যালি ও সেমিনারের মাধ্যমে নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে পুলিশি কার্যক্রমকে আরও গণমুখী করেছেন।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের মাঝে পুলিশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি করা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো। আমরা প্রতিনিয়ত জনগণের সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”