নির্ধারিত  দামে রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে মিলছে না গরুর মাংস। প্রতি কেজি মাংসের দাম  ৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও বেশির ভাগ দোকানে এ দামে মিলছে না মাংস। বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা বা এর চেয়ে বেশি দামে। অধিকাংশ দোকানে নেই মূল্যতালিকা।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর নবাবগঞ্জ , হাজারিবাগ,  বাজারে এমন চিত্র দেখা যায়।
হাজারিবাগ  বাজারে দুটি মাংসের দোকান। মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে  ৭০০ টাকায় মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে ওই বাজারের জুম্মন  দৈনিক দেশ বুলেটিনকে   বলেন, ভোটের আগে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখন গরুর দাম বেশি। এ দামে বিক্রি করলে লাভ থাকে না। প্রতিকেজি মাংসে প্রায় ৬৭০-৬৮০ টাকা খরচ আছে। তাই ৭০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়।
নবাবগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ছয়টি  মাংসের দোকানের কোনোটিতে মূল্য তালিকা নেই। বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন ৭০০ টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে যারা দরদাম করছেন তারা ১০-২০ টাকা কমে কিনতে পারছেন।
একই পরিস্থিতি দেখা গেছে, হাজারিবাগ বাজারেও। তবে কামরাঙ্গীরচরের মেইনরোডে বড় মাংসের দোকান সোহেল গোস্ত বিতানে এখনো ৬৫০ টাকা দরেই মিলছে মাংস। এ দোকানে সচরাচর কম দামেই মাংস পান ক্রেতারা।
দোকানের মালিক সোহেল বলেন, আমরা আগে ৬০০ টাকাও মাংস বিক্রি করেছি। দাম নির্ধারণের পর থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এখনো দাম বাড়ানো হয়নি।
দেশে গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গরুর দাম কমে যাওয়ার কারণে প্রতিযোগিতায় গরুর মাংসের দাম কমে ৬০০ টাকার নিচে চলে আসে। ওই সময় হাজারিবাগ,লালবাগসহ  বেশকিছু এলাকায় ৬০০ টাকায় মাংস বিক্রি শুরু হয়। একই সময়ে কোন কোন বাজারে আগের দামে ৭৫০ টাকায় মাংস বিক্রি হচ্ছিল। এরপর মাংসের দাম নিধারন করে  দেওয়ার উদ্যোগ নেয় ব্যবসায়ীরা। তখন খামারি ও মাংস ব্যবসায়ীদের সমিতি মিলে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয়।
তবে এরপরও কিছু দোকানে মাংস ৫৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে ঢাকার অধিকাংশ দোকানে উল্টো চিত্র। তারা মাংসের দাম ফের বাড়ানোর জন্য পাঁয়তারা করছেন।
বাংলাদেশে শেষ কয়েক বছর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল মাংসের দাম। সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবানুযায়ী ২০১৮ সালে মাংসের কেজি ছিল গড়ে ৪৩০ টাকা। যা ২০১৯ সালে হয় ৫০০ টাকা, ২০২০ সালে হয় ৬০০। ২০২১ সালে তা আরও বেড়ে হয় ৬৫০ টাকা, পরের বছর ৭০০ টাকা, আর শেষ গত ২০২৩ সালের রোজায় এ দাম ছুঁয়ে ফেলে ৮০০ টাকা।