গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভার শিমুলিয়া দক্ষিণ পাড়ায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে সম্পা আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূর। তার মরদেহ দাফন সম্পন্ন হলেও মৃত্যু নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা-কল্পনা।
সম্পা আক্তার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের কাতুলী গ্রামের ইসলাম মিয়ার মেয়ে। সাত বছর আগে তার বিয়ে হয় শিমুলিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে মোনারুল ইসলাম মামুনের সঙ্গে। তাদের সংসারে রয়েছে পাঁচ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান।
প্রাথমিকভাবে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি দাবি করেন, রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে সকলের অজান্তে সম্পা কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন। পরে স্বামী মামুন ও তার বাবা-মা (শ্বশুর-শাশুড়ি) মুমূর্ষু অবস্থায় সম্পাকে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে আনা হলে শ্বশুর ও শাশুড়ি তড়িঘড়ি করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
তবে ঘটনাটিকে ঘিরে উঠেছে নানা অভিযোগ। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্বামী মামুন মাদক ও ক্যাসিনো জুয়ার সাথে জড়িত। যৌতুকের টাকার জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন তিনি। ঘটনার দিনও বেধড়ক মারধরের পর সম্পা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী ও সম্পার পরিবার অভিযোগ করেন, মরদেহ রেখে পালানোর আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘরের মূল্যবান মালামাল সরিয়ে ফেলে। এছাড়াও, ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ও প্রভাব খাটাতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ১৪ জুলাই সম্পার মরদেহ তার বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুলফিকার আলী ভূট্টো জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সম্পার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়দের মতে, একটি প্রাণহানির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।