পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও যুবলীগ নেতা নাসির উদ্দিন হাওলাদারকে পিরোজপুর সদর থানায় বিস্ফোরক, চাঁদাবাজি, হত্যার চেষ্টা,ভাংচুর ও লুটপাটের মামলায় গ্রেফতার করে সোমবার (১২মে) জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রবিউল ইসলাম। এর আগে রবিবার (১১মে) বিকেলে নাসিরকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ভাংগাপ্রেস এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে পিরোজপুরে নিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর সদর থানায় গত ৭ এপ্রিল পিরোজপুরে জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: চান মিয়া মাঝি,তার ভাগ্নে পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য যুবলীগ নেতা নাসির উদ্দিন হাওলাদারসহ এজাহার নামীয় ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, ঘর ভাংচুর, লুটপাট, গুলিবর্ষন ও বোমা বিস্ফোরণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মো: জহিরুল ইসলাম কলিম বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আরও ২৫/৩০ জনকে আসামী করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মনোনীত প্রার্থী আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে আলহাজ্ব শামীম বিন সাঈদী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার নির্বাচনের পক্ষে তৎকালীন জেলা বিএনপি সদস্য মো: জহিরুল ইসলাম কলিম নির্বাচন করতে ঢাকা থেকে পিরোজপুরের দুর্গাপুরের বাড়িতে আসেন। আওয়ামী কৃষক লীগের পিরোজপুর জেলা সভাপতি চান মিয়া মাঝির নেতৃত্বে ২০১৮ মালের ২৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ২০/২৫ জন অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী বাহিনী পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের চান মিয়া মাঝির বাড়ির সামনের ব্রীজের ঢালে মো: জহিরুল ইসলাম কলিমের গাড়ি থামিয়ে গাড়ি ভাংচুর করে এবং গাড়ির মধ্যে থাকা ধানের শীষ প্রতীকের পোষ্টার ও লিফলেট ছিনিয়ে নেয়। এসময় হামলাকারীরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পরের দিন ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার দিকে জেলা কৃষক লীগের সভাপতি চান মিয়া মাঝির নেতৃত্বে ৫০/৬০জন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, চাইনিজ কুড়াল, রামদা, হকিস্টিক ও দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে জহিরুল ইসলাম কলিমের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা কলিমের বাড়ির সামনে বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে ২০/২৫ রাউন্ড গুলি ও ৮/১০টি বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে ঘরের প্রধান ফটক দা দিয়ে কুপিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে ভাংচুর করে। এসময় তারা স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও মালামাল লুটপাট করে নেয়। হামলাকারীরা কলিমের বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং কলিমকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পরে জীবন বাঁচাতে কলিম পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পালিয়ে যায়।
যাত্রাবাড়ী থানার সাব ইন্সপেক্টর ইফাদ বাবু জানান, “পিরোজপুর সদর থানার পাঠানো রিকুইজিশনের প্রেক্ষিতে যাত্রাবাড়ির ভাংগাপ্রেস এলাকা থেকে মামলার ২নং আসামি নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়।”
এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রবিউল ইসলাম বলেন, “বিস্ফোরক ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি যুবলীগ নেতা নাসির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে পিরোজপুর আদালতে পাঠানোর পরে আদালত আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করেন।।