গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারে একদিনে কমপক্ষে ৪২ হাজার কেজি সবজি বেচাকেনা হয়। গাজীপুর ও আশপাশের জেলার কৃষকের উৎপাদিত তাজা সবজি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়েও যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সপ্তাহের বুধবার এ বাজারের হাটের দিন। যত সবজি আমদানি হয় তার সবগুলো আসে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও, পাগলা, টাংগাবসহ গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব সবজি আমদানি হয়। হাটবার সবজি আমদানি ও বেচাকেনার সাথে প্রায় দুইশত শ্রমিক নিয়োজিত থাকেন। চাষিরা চলতি সবজি মৌসুমে বেচাকেনায় বেশ লাভবান।
শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজিতে জমে উঠেছে জেলার শ্রীপুরের পাঁচশত বছরের ঐতিহ্যবাহী বন্দর খ্যাত বরমী বাজার। ১৫৯০ সালে শীতলক্ষা নদীর তীরে বরমী বাজারের সৃষ্টি হয়। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাজার এটি। এখানে প্রতি বুধবারে সাপ্তাহিক হাট বসে। এই হাটের দিন বিক্রির জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা গফরগাঁও কাপাসিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের জমির টাটকা শাকসবজি নিয়ে বাজারে আসেন।গতকাল বুধবার সকালে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যা খেয়া ঘাটে ভোর থেকেই ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শীতকালীন টাটকা শাক-সবজি নিয়ে বসে আছেন। এরপর এগুলো হাক-ডাক করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। সকাল ১১ টা পর্যন্ত খেয়াঘাটেই বিক্রি হয় এসব সবজি।
বাজারের আড়তদার জানান, এই হাটের বেশিরভাগ সবজি আসছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা গফরগাঁওয়ের টাংগাব ইউনিয়ন থেকে। সকালে কৃষকরা ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভর্তি করে এসব সবজি নিয়ে আসেন। প্রতি হাটের দিন ৪-৫ লাখ টাকার সবজি বেচাকেনা হয়ে থাকে এই বাজারে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসছেন এই বাজারে। এছাড়াও শীতকালীন সবজি কৃষকদের কাছে থেকে সরাসরি কিনতে পারছেন পাইকাররা।স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও এসব সবজি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
গফরগাওয়ের টাংগাব গ্রামের কৃষক ফরিদ বলেন, এবার চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছি। তীব্র শীতের কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরেও প্রতি সপ্তাহে ৭০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারি। দামও মোটামুটি ভালো পাচ্ছি।বাজারে সবজি কিনতে আসা পাইকার দুলাল মিয়া বলেন, শীতকালীন টাটকা সবজি কিনতে বাজারে এসেছি। গত সপ্তাহে দাম একটু কম ছিল। তবে আজ বাজারে সবজির দাম একটু বেশি। ২৪ টাকা করে দুই শত পাতাকপি ও টমেটো কিনেছি ৩৩ টাকা করে।
আড়তের সবজি ব্যবসায়ী আফছার মৃধা জানান, বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক ভালো প্রায় সব সবজিতেই দাম পাচ্ছেন বিক্রেতারা। এখানে তিনজন আড়তদার রয়েছে প্রতিদিন একেকজনের ৫ হাজার টাকার মত করে আড়তদারী থাকে।
নৌকা থেকে সবজি আনলোড করছেন শ্রমিক আব্দুর রহিম। তিনি জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে ১১ টা পর্যন্ত সবজি আনলোড করে থাকেন। প্রতি খাঁচা সবজি আনলোড করতে তাকে দেওয়া হয় ১০ টাকা। এতে তিনি প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পান।