কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির সেক্রেটারি ও জামাত নেতা মুজিবুর রহমান এবং তার তিন ভাইসহ চার জনের বিরুদ্ধে প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুল হামিদ বাদী হয়ে ভূয়া কাগজপত্র সৃজন ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, কক্সবাজার শিক্ষা-দীক্ষায় পশ্চাৎপদ এলাকা হওয়ায় ২০১৩ সালে কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে ট্রাস্টির সেক্রেটারি মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোডের্র পক্ষে যোগাযোগকারী হিসাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগে প্রতারণার মাধ্যমে উদ্যোক্তা হিসাবে নিজের নামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি হাসিল করে নেন। পরবর্তীতে কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সালাউদ্দিন আহমদের অজান্তে তার দুই ভাই যথাক্রমে আবদুস সবুর ও আবদুল মাবুদ এবং আত্মীয় মনির উদ্দিন আরিফ নামের ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেন। এমনকি নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘জামায়াত-শিবিরের’ একটি ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করতে থাকেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘আসামিরা প্রতারক, ঠগ, ধুরন্ধর ও জামায়াত-শিবির ক্যাডার প্রকৃতির লোক।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে দুর্নীতি ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে টাকা আত্মসাত করতে থাকেন। ট্রাস্টি বোর্ডের সেক্রেটারি মুজিবুর রহমান অপর তিন আসামির যোগসাজসে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপির স্বাক্ষর জালিয়াতি, বিশ্বাস ভঙ্গ ও বিভিন্ন সভার সিদ্ধান্ত ঘষামাজাসহ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ কোটি ৯৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি অভিযোগ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নামীয় ব্যাংক হিসাব ছাড়াও শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির টাকা পর্যন্ত আত্মসা’ করেছে।’ আত্মসাতের টাকা আরও বেশি হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের সেক্রেটারি এবং মামলার অন্যতম আসামি মুজিবুর রহমান জানান, তিনি মামলার অভিযোগের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপরদিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবু মো. শাহজাহান কবির জানান, কক্সবাজারের একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি রেকর্ড করে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।