দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় বন্ধুর হাতেই প্রাণ গেল আরেক বন্ধুর। হত্যার কথা স্বীকার করেছে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনোজিৎ রায় (২৫) ওরফে মম। নিহতের নাম সাধন চন্দ্র রায় (২৫)।
বোচাগঞ্জ উপজেলার রনটি গ্রামের সাধক চন্দ্র রায় (২২) হত্যা মামলায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। অভিযুক্ত মনোদ্বীপ রায় (২০)-কে গ্রেফতারের পাশাপাশি নিহতের মোটরসাইকেল ও হত্যায় ব্যবহৃত বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৫ জুন সকালে, যখন বোচাগঞ্জ থানার ০২নং ইশানিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উৎপল রায় বুলুর বেদাহার নামক পুকুরে সাধকের মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বোচাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলাটির তদন্তে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন এর দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. আনোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এবং বোচাগঞ্জ থানার একটি সমন্বিত টিম দ্রুত তৎপরতা শুরু করে।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত মনোদ্বীপ রায় জানায়, গত ৩ মে সে সাধক চন্দ্র রায়ের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা সুদে ধার নেয়। শর্ত ছিল এক মাসের মধ্যে মূল টাকা ও অতিরিক্ত এক হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত না দেওয়ায় বিষয়টি সাধকের পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। এরপর সাধকের মা অভিযোগ করলে মনোদ্বীপের মা তাকে বকাঝকা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনোদ্বীপ ২৩ জুন রাতে সাধককে কৌশলে ডেকে নেয় পুকুরপাড়ে, এবং কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে লাশ ও ভিকটিমের ডিসকভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল পুকুরে ফেলে দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মোটরসাইকেল এবং হত্যায় ব্যবহৃত লাঠি উদ্ধার করেছে। আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দিনাজপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুততম সময়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং আসামি গ্রেফতার তাদের পেশাদারিত্ব ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।