ভোলার চরফ্যাসনের আবুবকরপুর গ্রামে চার দফা তান্ডব চালানোকালে এক সবজি ব্যবসায়ী হত্যাসহ ১০ জনকে পিটিয়ে কুপিয়ে জখম, ঘরবাড়ি ভাংচুর, টাকা লুট করার ঘটনায় অ়ভিযুক্ত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক আল-আমিনকে বহিস্কার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে চরফ্যাশন খানদানি হোটেলের হল রুমে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মুনতাসির আলম রবিন চৌধুরী জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ও অভিযোগের সত্যতার প্রমান পাওয়ায় আলআমিনকে তার কমিটির পদ ও দলীয় সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবি করে নিহত ও আহত পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানান জেলা ও উপজেলার দলের নেতারা।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ মিজানুর রহমান মাসুদ জানান, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক কেন্দ্রে জানানো হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে অভিযুক্তকে বহিষ্কার ও জেলা কমিটির সদস্য সচিবকে প্রধান করে একটি টিম গঠন করা হয়।
ওই টিম শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নিহত পরিবারকে শান্তনা ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান। হামলার ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান বাদি হয়ে চিহ্নিত ২০ জন ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম জানান, ২০ জন আসামীর মধ্যে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। মূল হোতা আলামিন এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় চরম ক্ষোভ জানান নিহতের পরিবার। স্থানীয়রা জানান, এলাকায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে দুই নারীর ঝগড়ার কারণ জানতে এসে অপমানিত হন আলামিন ও তার ক্যাডার সদস্যরা।
এর প্রতিশোধ নিতে চার দফা বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর , নারী পুরুষদে পিটিয়ে, কুপিয়ে তান্ডব চালান উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলেন সাধারন সম্পাদক আল-আমিন ও তার ক্যাডার বাহিনী।
হামলায় মারা যান ঢাকার সাভারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ(৩৮)। আহত হন কম পক্ষে আরো ১০ জন। মাসুদ ঈদ উদযাপনের জন্য বাড়ি আসেন।
প্রথম বুধবার রাতে হামলা করে আলামিন বাহিনী। ফের শুক্রবার নিহত মোঃ মাসুদের দুই ভাইকে পথে পেয়ে বেধরক মারধর করে, টাকা ছিনতাই করে আলামিন বাহিনী।
পরে ফের বাড়িতে ঢুকে মারধর করে নারী ও পুরুষদের। এ সময় আহত মাসুদ কে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। নিহত মাসুদ ওই গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে ও ঢাকা সাভার এলাকার একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
নিহতদের ভাই রায়হান জানান, ঈদে তারা ঢাকা থেকে আবুবক্করপুর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বুধবার রাতে তার স্ত্রী আকলিমা ও বোন সিমার মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় প্রতিবেশী আবুবক্করপুর ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক আলামিনসহ কয়েকজন যুবক ওই বাড়িতে গিয়ে ঝগড়ার কারণ জানতে চান।
এসময় তার ছোট ভাই রাসেল তাদেরকে ঘরে ঢুকতে না দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। এনিয়ে ওই সেচ্ছাসেবক দল নেতার সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। তর্কের জেরে সেচ্ছাসেবক দল নেতা তার দলবলকে ডেকে এনে রাতেই প্রথম দফায় ওই বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন।
পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে তৎক্ষনিক ওই ঘটনার মিমাংসা করে দেন। এতে সন্তুষ্ট হননি সেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিন। তার অব্যহত হুমকি ধামকিতে বাড়িতেই অবরুদ্ধ ছিলেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।