আজ ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হলো। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম এই বিচার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করছে।
১৫ বছরের শাসনামলে গণহত্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, ভোটবিহীন নির্বাচন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল এই অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করে।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এই বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা একটি শক্তিশালী বার্তা দিতে চাই যে, মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো জায়গা নেই।” তিনি আরও জানান, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এটি সরাসরি সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা এই বিচার প্রক্রিয়াকে “গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিজয়” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এটি একটি উদাহরণ স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।
দেশের জনগণের মধ্যে এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এটিকে ন্যায়বিচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিহিত করছেন। রাজধানীর এক বাসিন্দা বলেন, “যদি এই বিচার সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে এটি দেশের জন্য বড় অর্জন হবে।”
আইন বিশেষজ্ঞরা এই বিচারকে বাংলাদেশের আইনি ইতিহাসের একটি মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন যে, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক শুনানি শেষে, আসামিদের পক্ষে এবং বিপক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই বিচার কার্যক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল ন্যায়বিচারের প্রতীক নয়, বরং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি শক্তিশালী করার দিকেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন অপেক্ষা করছে এই বিচার প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপের জন্য।