বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সাইফুর রহমান রানার ‘মৌসুমি পাখি’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নাগেশ্বরীর রাজনৈতিক অঙ্গন। আজ ৯ আগষ্ট সকাল ১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এ মন্তব্যকে “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, কুরুচিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী” বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের কাছে রানার বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
গোলাম রসুল রাজা অভিযোগ করে বলেন, “জেলা বিএনপির শোকজ সম্পূর্ণভাবে সাইফুর রহমান রানা ও জেলা কমিটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, তিনি জবাবে অপ্রাসঙ্গিকভাবে আমাকে ‘মৌসুমি পাখি’ বলে আক্রমণ করেছেন। এটি একজন দীর্ঘদিন মাঠের রাজনীতিতে নিবেদিত নেতার বিরুদ্ধে হীনমন্যতাজনিত অপচেষ্টা।”
প্রতিবাদপত্রে তিনি বলেন তার প্রয়াত বাবা মকবুল হোসেন ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি এন পি) র প্রতিষ্ঠা সদস্য ও দীর্ঘদিন নাগেশ্বরী উপজেলা বি এন পি র সভাপতি। তিনি পারিবারিক ভাবেই বি এন পি’র আদর্শের সৈনিক।নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৮৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ছাত্রদলে যোগ দেন। এরপর শাহ মখদুম হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও ১৯৯০ সালের এরশাদ পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
তিনি আরও বলেন, প্রয়াত পিতা মরহুম মকবুল হোসেনের রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছেন। ১৯৯৯ সালে সহ-সভাপতি, ২০০৯ ও ২০১৫ সালে ধারাবাহিকভাবে সভাপতি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির অনুমোদিত ৪১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সাবেক এমপির মন্তব্যকে ‘মিথ্যা, অপমানজনক ও বিভ্রান্তিমূলক’ আখ্যা দিয়ে রাজা বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য দলের ঐক্য, শৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ ক্ষুণ্ণ করে। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে দেওয়া এই মন্তব্য দলীয় সৌহার্দ্য নষ্টের অপচেষ্টা।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমরা যারা মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকবো—তাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ করে কেউ সাময়িক ফায়দা নিতে পারে, কিন্তু ইতিহাস কাউকে ছাড় দেয় না।”
এই ঘটনায় নাগেশ্বরী বিএনপিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিভক্তির চিত্র আরও প্রকট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।