ভোলার মনপুরায় হাজীরহাট বাজার মসজিদে নামাজ পড়তে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সাংবাদিক আবদুল্লাহ জুয়েল পিটিয়ে জখম করলেন মনির নামক হাজীর হাট বাজারের এক কম্পিউটার ব্যবসায়ীকে। এসময় জুয়েলের সহযোগী মামুনসহ মনিরের কম্পিউটারের দোকানে ভাংচুর করে। এবং এবিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে গলা কেটে খুন করার হুমকি প্রদান করেন। উক্ত ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত ৯ টায় উপজেলার হাজীর হাট বাজারের পশ্চিম গলিতে আওয়ামীলীগ পার্টি অফিসের সামনে অবস্থিত কোয়ালিটি সীল ও প্রেস নামক দোকানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাজীর হাট বাজারের পশ্চিম গলিতে আওয়ামীলীগ পার্টি অফিসের সামনে অবস্থিত কোয়ালিটি সীল ও প্রেস নামক দোকানের মালিক মোঃ মনির হোসেন (৪০) মারকাজ মসজিদে এশার নামাজ আদায় করতে যান। মনির মসজিদে ফরজ নামাজ শেষে সুন্নত নামাজ আদায় করছিলেন। তার সামনের কাতারে নামাজ পড়ছিলেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার মনপুরা উপজেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ জুয়েল। এসময় পেছনে থাকা মনিরের নামাজ শেষ করতে দেরি হওয়ায় জুয়েল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। নামাজ শেষ করে মসজিদের পার্শবর্তি রহমান বেকারি নামক দোকানে গিয়ে মনির বলেন, জুয়েল ভাই আমি নামাজ শেষ করতে একটু সময় লেগেছে, আপনি আমাকে এভাবে খারাপ ভাষায় গালি গালাজ করলেন কেন? এ কথা জিজ্ঞাসা করায় সাংবাদিক জুয়েল মনিরকে ফের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধরের জন্য তেড়ে আসে। জুয়েলকে উত্তেজিত দেখে মনির কথা না বাড়িয়ে চলে যায়।
পরে রাত ৯ টায় সাংবাদিক আবদুল্লাহ জুয়েল তার সহযোগি দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকা থেকে অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত থাকায় বরখাস্ত হওয়া নজরুল ইসলাম মামুন ও যুবলীগ সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান রনিকে সাথে নিয়ে কোয়ালিটি সীল ও প্রেসে গিয়ে ব্যবসায়ী মনিরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাকে এলপাতারি কিল, ঘুষি ও লাথি দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়। এবং দোকানে থাকা কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টারসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এবং এঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গলা কেটে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যান তারা।
বাজারের একজন ব্যবসায়ীকে পোটানোর ঘটনায় বিচার দাবী করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাজীর হাট বাজারের ব্যবসায়ীরা। উক্ত ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।উপজেলা সদরে অবস্থিত হাজীর হাট বাজারের ব্যবসায়ী বেলায়েত মিয়া, মহিউদ্দিন মিয়া, হাজী নিজাম উদ্দিন, হাজী লোকমান, মাওলানা নুরনবী, বিদ্যুত মিয়া, সেলিম মোল্লা, কালাম হাজী, শাহিন হাওলাদার, হাফেজ তালহা, রুবেল শিকদার জানান, দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আবদুল্লাহ জুয়েল বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবী করে আসছে। তাকে চাঁদা না দিলে দোকানের সামনে দাড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আসছে দীর্ঘদিন। এছাড়াও তাকে চাঁদা না দিলে ইয়াবা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন জুয়েল।
এ ব্যাপারে বাজারের ব্যবসায়ী কাওছার, ইলিয়াস ফরাজী, নজরুল, সুমন ফরাজী, ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক আবদুল্লাহ জুয়েল তার সহযোগী নজরুল ইসলাম মামুনকে সাথে নিয়ে মনপুরায় ইয়াবা সেবন ও মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। মনপুরা প্রেসক্লাবকে তারা মাদকের নিরাপদ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এবং তারা বিভিন্ন সময়ে সামান্য কারনেও বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে মারধর ও দোকার ভাঙচুর করেছেন।
এ ব্যাপারে মারধরের স¦ীকার কোয়ালিটি সীল ও প্রেস এর মালিক মোঃ মনির হোসেন জানান, নামাজ আদায় করতে দেরি হওয়ায় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সাংবাদিক আবদুল্লাহ জুয়েল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। গালিগালাজ করার কারন জানতে চাওয়ায় তিনি উত্তেজিত হয়ে নজরুল ইসলাম মামুন ও মনিরুজ্জামান রনিকে সাথে নিয়ে আমাকে মারধর করেছেন। এবং আমার দোকানে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে দোকানে থাকা কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টারসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। এবং এঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গলা কেটে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যান তারা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
হাজীর হাট বাজার কমিটির সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দিন হাওলাদার ও সাধারন সম্পাদক আবুয়াল হোসেন মেম্বার হজ¦ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে থাকায় এব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, হাজীর হাট বাজারে ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।