1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাড়ছে গোমতী নদীর পানি, কুমিল্লায় বন্যার শঙ্কা রংপুরের পীরগাছায় পদায়ন হলেন সাতক্ষীরার সেই বিতর্কিত ইউএনও বকশীগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও পরিবেশ উন্নয়নে বহুমুখী উদ্যোগ ইউএনও মাসুদ রানার তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে Asian Business iconic Awards-2025 অর্জন করেছেন কুড়িগ্রামের যুবক মোহাম্মদ আরিফ বিন খন্দকার। শিবগঞ্জে ১০ হাজার আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস বদলগাছী থানাধীন বেগুন জোয়ার এলাকা থেকে বিপুল পরিমান গাঁজাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৫ মেলান্দহে শিক্ষার্থীদের মাঝে মশারি বিতরণ কাঠের ঘানি দিয়ে তেল মাড়াই যে গরুর বিকল্প ব্যাটারি চালিত মোটরসাইকেল বিষাক্ত চিংড়ি ৮০ কেজি ও নৌকা আটক, জড়িতরা পলাতক চিরিরবন্দরে নার্সারিতে অভিযান পরিবেশবিরোধী ইউক্যালিপ্টাস-আকাশমনি চারা ধ্বংস

রৌমারী সীমান্ত: অনিয়ন্ত্রিত চোরাচালান, অস্তিত্বের হুমকিতে যুবসমাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম জেলার দুই সীমান্তবর্তী উপজেলা রৌমারী ও রাজিবপুর যেন ক্রমেই পরিণত হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের এক অভয়ারণ্যে। ভৌগোলিকভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন এই দুই উপজেলায় সীমান্তের ওপারে ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবরি, দক্ষিণ সালমারা ও মানকাচর জেলার বিস্তৃত চরাঞ্চল। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো যেমন—কুকুরমারা, বোলবোলারচর, মুর্শিদাবাদ পাড়া, ও শিংগিমারী, অন্যদিকে বাংলাদেশের অংশে সাট কড়াই বাড়ি, ধর্মপুর, কাউয়ার চর, চরবোয়ালমারী, গয়টাপাড়া, ও বেহুলারচর—এইসব এলাকা দিয়ে অনায়াসে প্রবেশ করছে ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল, মদ, এমনকি চোরাই গরু ও অন্যান্য দ্রব্য।
সীমান্তের নদীভিত্তিক চরাঞ্চলগুলোর অবস্থান এমন যে, নৌপথে কিংবা হাঁটাপথেই সহজে ভারত থেকে মাদক প্রবেশ করানো সম্ভব।
রৌমারী উপজেলা সদরের বাজারের চা স্টল এখন ইয়াবার খুচরা বিক্রির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।এমনকি আযাদ নামের এক কারবারীকে গ্রেফতারও করেছে রৌমারী থানা পুলিশ। মাঝে মাঝেই অভিযান চলে, কিছু কারবারি ধরা পড়ে, কিন্তু মূল হোতারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সম্প্রতি উপজেলা হাসপাতাল গেট থেকে ১৩ কেজি গাঁজাসহ ২জনকে আটক হয়। আরেক ঘটনায় রৌমারীর একটি বাড়ির গোয়ালঘরের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় দেশি চোলাই মদের গ্যালন। স্থানীয় সূত্র বলছে, “মাঝে মাঝেই গ্রেফতার হচ্ছে , আবার জামিনে বের হয়ে আবারও একই কাজে নামছে।” ফলে প্রশ্ন উঠেছে আইন প্রয়োগের ধারাবাহিকতা ও কার্যকারিতা নিয়েও।
রৌমারী থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ লুৎফর রহমান  জানান, “আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু ভৌগোলিক বৈচিত্র্য ও সীমান্তজুড়ে পর্যাপ্ত নজরদারির ঘাটতির কারণে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।”
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে বিপুল পরিমাণ ‘অরক্ষিত চরাঞ্চল ও গোপন নদীপথ’ এখনও নজরদারির বাইরে।
চরাঞ্চলের অনেক যুবকই বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের অভাবে মাদকের জালে জড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় সমাজকর্মী সিরাজুল ইসলাম জানান, “অর্থের লোভ আর কিছুমাত্র বাধা না থাকায় অনেকেই জড়িয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার পরিবারসহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
অভিযোগ রয়েছে, অনেক মাদক ব্যবসায়ী রাজনৈতিক পরিচয়ে কিংবা প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়ে থেকে বারবার রক্ষা পাচ্ছে। ফলে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও আদালত থেকে সহজেই জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠছে তারা।
রৌমারী-রাজিবপুরের এই চিত্র শুধু স্থানীয় নয়, বরং দেশের মাদক প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিণত হয়েছে। সীমান্তরক্ষা, আইনের প্রয়োগ, প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সচেতন নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ না থাকলে এই এলাকার ভবিষ্যৎ আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, সীমান্তে বিজিবি ও পুলিশের সমন্বিত অভিযান বৃদ্ধি, চিহ্নিত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, এবং চরাঞ্চলের তরুণদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com