র্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে চাঞ্চল্যকর অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবী ঘটনার অন্যতম হোতাকে র্যাবের ইউনিফর্ম, ফেইক আইডি কার্ড, দেশী ও বিদেশী অস্ত্র, গুলি ও হ্যান্ডকাপসহ গ্রেফতার
গত ১১ জুন বুধবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫’তে বসবাসরত মোঃ রহিমুল্লাহর ছেলে মোঃ হাফিজ উল্লাহকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও এনায়েত উল্লাহর যোগ-সাজশে র্যাব পরিচয়ে ৩ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বরখাস্ত-কৃত সৈনিক সুমন, সন্ত্রাসী ফারুক, সন্ত্রাসী শিকদার তার নিজ বসত-বাড়ী হতে ডেকে রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে অজ্ঞাত স্থান থেকে সন্ত্রাসী’রা ভিকটিমের পরিবারের নিকট ১৫,০০,০০০/- (পনের লক্ষ) টাকা মুক্তিপন দাবী করেন।
অপহরণের সংবাদ প্রাপ্তির পরক্ষণেই র্যাব-১৫ এর একটি চৌকস দল গত ১৩ জুন (শুক্রবার) রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান মূলহোতা কুখ্যাত ডাকাত শাহ আলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুজন সন্দেহ-ভাজন’কে আটক করতে সক্ষম হয়।
র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করে গত ১৪ জুন (শনিবার) মরিচ্যা বাজার থেকে মূল অপহরণ-কারী বরখাস্তকৃত সৈনিক মোঃ সুমন মুন্সিকে আটক করতে সক্ষম হয়।
বরখাস্তকৃত সৈনিক সুমনকে নিয়ে তারই দেওয়া তথ্য মতে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য গত ১৫ জুন (রবিবার) র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বনবিভাগের আড়াই শতাধিক জনবল নিয়ে ভিকটিমকে আটকে রাখার গহীন অরণ্যে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অপহরণের ৭২ ঘন্টা পরে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই এবং ০১টি দেশীয় অস্ত্র, ০৩ রাউন্ড এ্যমুনেশনসহ র্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধারে সক্ষম হই। এ বিষয়ে আমি আপনাদেরকে ঐ দিনই ব্রিফ করেছি।
আটককৃত সন্ত্রাসীদের তথ্য মতে আমরা গোয়েন্দা কার্যক্রম আরো বেগবান করি এবং গত ২৭ জুন (শুক্রবার) হাফিজুল্লাহ অপহরণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কুখ্যাত ডাকাত শিকদারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। শিকদারের দেয়া তথ্য মতে আমরা গতকালকে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে সন্ত্রাসী ফারুক”কে আটক করি। ফারুকের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত ৪টি র্যাবের ইউনিফর্ম, ১টি র্যাবের ফেইক আইডি কার্ড, ১টি হ্যান্ডকাপ, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২ টি দেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ১০ রাউন্ড তাজা এ্যমুনেশন, ১১ রাউন্ড এমটি কার্টিজ ও ১টি চাকু উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আমরা সন্ত্রাসীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি যে, বরখাস্তকৃত সৈনিক সুমন র্যাবে চাকুরীর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কয়েক বছর আগে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট থেকে র্যাবের ইউনিফর্মগুলো তৈরী করেছে।
আমরা আরো জানতে পারি যে, একেকটি ইউনিফর্ম প্রস্তুত করতে তিনি (২৫০-৫০০) টাকা ব্যয় করেছেন। সন্ত্রাসীরা বর্ণিত ইউনিফর্মগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে র্যাবের পরিচয়ে অপহরণ করে আসছিল। আপনারা সবাই জানেন যে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত পোষাক ব্যক্তিগতভাবে তৈরী এবং ব্যবহার করা গুরুতর অপরাধ। আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশের সকল টেইলার্স ও পোষাক প্রস্তুতকারী কোম্পানীদের সতর্ক করে দিতে চাচ্ছি যে, এ ধরণের অপরাধ থেকে তাদেরকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিস্তারিত পরিচয় ঃ
মোঃ জায়েদ হোসেন ফারুক (২২), পিতা-আঃ শুক্কুর, মাতা-ছমুদা খাতুন, গ্রাম-পশ্চিম মরিচ্যা ১নং ওয়ার্ড, ইউপি-হলুদিয়া পালং, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার।
র্যাব-১৫ প্রেস ব্রিফ্রিং-এ প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন হাফিজুল্লাহ অপহরণের সাথে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ সন্ত্রাসীদেরকে আটক করতে পারলেও এখনো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন ও কুখ্যাত ডাকাত শাহআলমসহ কয়েকজন ধরাছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে। বর্ণিত পলাতক সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।