জেলা লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলার পাঁচ সীমান্ত দিয়ে এক শিশুসহ ৫৫ জন নারী ও পুরুষকে পুশইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এসব নারী-পুরুষের ভারতীয় প্যান কার্ড, আধার কার্ড সহ যাবতীয় পরিচয়পত্র ও সঙ্গে থাকা রুপি কেড়ে নিয়েছে বাহিনীটি।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত আড়াইটা থেকে বুধবার (২৮ মে) দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের বাধায় ব্যর্থ হয় বিএসএফ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আদিতমারী উপজেলা দীঘলটারি বিজিবি ক্যাম্পের ৯২৪/ ৯এস সীমানা পিলার সংলগ্ন চওড়াটারি এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়ার এপারে ভারতীয় অংশে অবস্থান নিয়ে রাইফেল তাক করে আছে বাংলাদেশের দিকে। এদিকে সীমানার একেবারেই কাছে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে ভারতের দিকে রাইফেল তাক করে আছেন বিজিবি সদস্যরা। এ সময় এলাকাবাসীকেও বিজিবির পাশে লাঠি হাতে অবস্থান করতে দেখা যায়। রাত থেকে বুধবার দিনভর পুরো সীমান্ত এলাকার লোকজনের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, বুধবার ভোরের দিকে আদিতমারীর দুর্গাপুরের চওড়াটারি সীমান্ত দিয়ে আট মাসের এক শিশু, ৬ জন নারী ও ৬ জন পুরুষসহ মোট ১৩ জনকে পুশইনের চেষ্টা করে। একই সময় থেকে হাতীবান্ধার বনচৌকি দিয়ে ছয়জন এবং পাটগ্রামের আমবাড়ি, পচা ভাণ্ডার ও ধবলগুড়ি ও সফিরহাট সীমান্ত দিয়ে ৩৬ জনকে একযোগে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে পুশইনের চেষ্টা করে বিএসএফ।
তবে বিজিবি ও এলাকাবাসীদের বাধায় তা ব্যর্থ হয়। সীমান্তগুলোতে উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকায় পুশইনের শিকার লোকজন ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রখর রোদে ক্ষুধার্ত অবস্থায় পড়ে আছেন ভারতীয় অংশে খোলা আকাশের নিচে। বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন ঠেকাতে বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীরা এখন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো লোকজন আসামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
এদিকে ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে পুশইন করা ব্যক্তিরা নিজেদেরকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করেছেন। তাদের অভিযোগ, বাংলাভাষী ও মুসলিম হওয়ার কারণে তাদেরকে ধরে এনে বাংলাদেশি বলে পুশইন করার চেষ্টা করছে বিএসএফ।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি ইমাম দৈনিক গনকন্ঠ কে বলেন, জেলার কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভোরের দিকে পুশইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। কোনো অবস্থাতে কেউ যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।