সারাদেশের ন্যায় খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড় দিন উৎসব শেরপুরে ৮৪ টি গির্জায় বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে আজ ২৫ ডিসেম্বর সোমবার জেলার বিভিন্ন খ্রীষ্টান মিশন এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে দিনব্যাপী চলে প্রার্থনা, আরাধনা আর নানা উৎসব।
জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জ ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় উৎসবে সকল বয়সের শত শত খ্রীষ্ট ভক্তগন অংশগ্রহণ করেন। এতে সকাল ৮ টা থেকে সারদিনব্যাপী প্রার্থনা সঙ্গীত সহ নানা আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়।
এদিন দুপুর ১২ টার দিকে জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার মরিয়মনগর ধর্মপল্লীতে বড় দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম। তিনি ফাদার ভবনে বড় দিনের কেক কাটায় অংশগ্রহণ করেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. খোরশেদ আলম, ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল, ফাদার সুবাস ডেবিট দাস, আদিবাসী নেতা প্রাঞ্জল সাংমাসহ মিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জেলা সদরের চর শ্রীপুর, পৌর এলাকার কসবা গরোপল্লী, সীমান্তের ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর আদিবাসী খ্রীষ্টান ধর্মপল্লী, নালিতাবাড়ী উপজেলার বারোমারী সাধু লিওর খীষ্ট ধর্মপল্লী, পানিহাটা পাদ্রী মিশন ও শ্রীবরর্দী উপজেলার বাবলাকোনা আদিবাসী খ্রীষ্টান ধর্মপল্লীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার ৮৪ টি গীর্জায় প্রায় বিশ হাজার খ্রীষ্টান ধর্মে দিক্ষিত গারো আদিবাসীসহ খ্রীষ্টভক্তরা শুভ বড় দিন উদযাপন করেন।
বিপুল উৎসাহে বড়দিনের কেককাটা, যীশুর জন্মস্থান প্রতিকী গোয়ালঘর তৈরী করে আরাধনা, খ্রীষ্টমাস ট্রি সাজানো, বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাওয়াতে অংশগ্রহণ ও প্রীতিভোজ এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খ্রীষ্টভক্তরা। তারা নতুন জামা-কাপড় পরিধান করে বিভিন্ন গীর্জায় গীর্জায় আরাধনায় অংশগ্রহণ করেন। বড়দিন উপলক্ষে গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বারি বাড়ি চলে কীর্ত্তণ। এছাড়া বিকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। ওইসব এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে আলোকসজ্জা এবং ঘরবাড়িও সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।
জেলার বাইরে দেশের বিভিন্নস্থানে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনরা বড় দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে দিনটির আনন্দ উপভোগ করেছেন। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দিনব্যাপী বিভিন্ন গির্জার পাশে চলে শিশুদের এবং আদিবাসীদের বাহারী পণ্যের মেলা। এদিকে খ্রীষ্টভক্তদের বড় দিনের উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়।