১ম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের দাবি, তারা যোগ্যতা প্রমাণ করেও নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
১ম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা দীর্ঘ ১০ থেকে ২০ বছর ধরে শিক্ষক পদে নিয়োগের আশায় অপেক্ষা করলেও আজও তারা বঞ্চিত। সরকারি নিয়োগ সংস্থা এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যত কোনো স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া তাদের জন্য বাস্তবায়িত হয়নি।
২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১ম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এনটিআরসিএর সনদপ্রাপ্ত হলেও তাদের অধিকাংশই কোনো নিয়োগ পাননি। অথচ ২০১৮ সালে মহামান্য হাইকোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায়ে নির্দেশ দেন যে, ১-১২তম নিবন্ধনধারীদের জাতীয় মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বয়সসীমা শিথিল করে নিয়োগ দিতে হবে। ২০১৮ সালের ১২ জুনের আগে যারনিবন্ধন সনদ পেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বয়সসীমা শিথিল করার নির্দেশ দেয়। এছাড়া, মহামান্য রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে সনদের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে আজীবন করা হয়।
এনটিআরসিএ ১৭টি নিয়োগ পরীক্ষার সুপারিশ করলেও মাত্র পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে বহু নিবন্ধনধারী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে এনটিআরসিএ ১ম থেকে ১২তম, বিশেষ ১০ম এবং ১৩তম নিবন্ধনধারীদের নিয়ে একটি সম্মিলিত জাতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকা প্রকাশের ফলে পুরনো নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়।
বঞ্চিত শিক্ষকদের অভিযোগ, এনটিআরসিএ বারবার গণবিজ্ঞপ্তি দিলেও কম মেধাক্রমের প্রার্থীরা নিয়োগ পাচ্ছেন। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যাদের প্রথমে নিয়োগ পাওয়ার কথা, তারা আজও অবহেলিত।
২০০৫ সাল থেকে শুরু হওয়া শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হাজার হাজার তরুণ-তরুণী আজ পেরিয়ে গেছেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। তারা এখনো শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত হতে পারেননি শুধুমাত্র প্রশাসনিক জটিলতা, দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা এবং সদিচ্ছার ঘাটতির কারণে। ২০১৮ সালের উচ্চ আদালতের রায় এবং তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়নে রয়েছে গড়িমসি।
একটি বিশেষ নির্দেশনা, একটি প্রশাসনিক সার্কুলার কিংবা একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করলেই ১ম থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটানো সম্ভব।