মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। এতে হুমকির মুখে পড়ছে আবাদি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। মাটি কাটার ফলে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। আবাদি জমি পরিণত হচ্ছে অনাবাদি। এতে কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদন। সেইসাথে পার্শ্ববর্তী জমি মালিকদের মধ্যেও ভাঙন আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বায়রা ইউনিয়নের নয়াবাড়ি মৌজার নদী সিকস্তির জায়গা, বলধারা ইউনিয়নের খোলাপাড়া এলাকার হুনাখালির চক ও গোলাইডাঙ্গা এলাকার শফিক কোম্পানির ইটভাটা সংলগ্ন ফসলি জমি থেকে এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা চার-পাঁচটি মেশিন দিয়ে ছয়-সাত ফুট গভীরভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। এক জমির মাটি কাটায় অন্যদের জমি উঁচু হচ্ছে। এতে বাধ্য হয়ে তারাও মাটি অথবা জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব এলাকার মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারছেন না সাধারণ জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, দিনরাত্রি অবাধে মাটি কাটা চলে। মাটি বহনে কাকড়া ও ভারি ড্রাম ট্রাক ব্যবহৃত হওয়ায় গ্রামীন রাস্তা গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পাকা রাস্তা দিয়েও এসব মাটি বহন করা হয়। এর ফলে রাস্তাগুলোও ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে। কুয়াশা অথবা হালকা বৃষ্টি হলে রাস্তায় পরে থাকা মাটি পিচ্ছিল হয়ে এসব রাস্তায় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।
নয়াবাড়ি এলাকার নদী সিকস্তি জায়গা থেকে মাটি বানিজ্য করার বিষয়ে কথা হয়, জুয়েল, স্বপন ও মনিরের সাথে তারা বলেন, আমরা সাবেক মেম্বার বদরুদ্দিন (বদু) এর কাছ থেকে মাটি কিনে ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছি। এর আগে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আমাদেরকে জরিমানা করা হয়েছিলো। জমির কাগজপত্র উপজেলায় জমা দিয়েছি এখন আর কোন সমস্যা নাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে খোলাপাড়া এলাকায় রুমি কোম্পানির নামে মাটি বানিজ্য করছে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস। একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তার ছেলে খোকন আকবর বলেন, মাটি ছাড়া তো ইট তৈরি হবেনা।
গোলাইডাঙ্গা এলাকার শফিক কোম্পানির ইটভাটা বর্তমানে পরিচালনা করছেন এ.কে.বি কোম্পানি। কোম্পানির ভাই পরিচয়ে বাবু বলেন, আমরা ঢাকা থেকে এখানে শফিকের ইটভাটা ভাড়া নিয়েছি। মাটি শফিক কোম্পানি কিভাবে দেয় সেটা বলতে পারবোনা। এবিষয়ে শফিক কোম্পানির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিংগাইর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল কাইয়ুম খান, মাটি বানিজ্যের কোন সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে নয়াবাড়ি এলাকায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মাটি বানিজ্যের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।