1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শেখ হাসিনা ভারতে থাকবে যতদিন ততদিন বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না- সার্জিস আলম মির্জাপুর যুবলীগের সাবেক আহবায়ক জিএস সেলিমের স্ত্রী ইয়াবাসহ আটক ঝালকাঠিতে বৃষ্টিতে ডুবেছে শহর, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি চরমে শিক্ষার মানোন্নয়নে ইউএনও স্যারের বিদ্যালয় পরিদর্শন বাল্যবিয়ে ও শিশু অধিকার বিষয়ক কর্মশালা ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলজুড়ে ঝড়ো হাওয়া, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা ঝালকাঠিতে ডিবির অভিযানে ইয়াবাসহ দুই কিশোর আটক বাগাতিপাড়ায় পুলিশের ওপেন হাউজ ডে কয়রা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের পদত্যাগ: ফ্যাসিবাদ নির্মূলে নতুন অধ্যায়ের জল্পনা পলাশবাড়ীতে ৭০ লক্ষ টাকা আত্মসাত এবং উদ্ধারের দাবিতে সংগঠনের সাবেক সেক্রেটারি বিপ্লবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধ

সু্ন্দরবন হাসপাতালে প্রসূতি মায়েরর মৃত্যু, ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

তালুকদার হাসান
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা ফয়লা বাজারে অবস্থিত বেসরকারি সু্ন্দরবন (প্রা) হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে আবারো প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত সোমবার (২৬ মে) রাত ৯ টায় ওই হাসপাতালে অজ্ঞাত চিকিৎসক দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের এক ঘণ্টার মধ্যে তানিয়া বেগম (২০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসা সেবার অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) দুুপুরে হাসপাতালটি পরিদর্শনে যান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুকান্ত কুমার পাল। এসময় তিনি ওই হাসপাতালের জরুরি সেবা’সহ চিকিৎসার ব্যাপক অনিয়ম দেখেন।

সতর্কতার পরও বারবার ভুল চিকিৎসা ও অব্যবস্থাপনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতালটির অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার ছোট নবাবপুর গ্রামের ফেরদৌস এর স্ত্রী প্রসূতি তানিয়া বেগমকে ওই হাসপাতালে সিজারিয়ান করানোর দুই দিন পূর্বে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দিন সোমবার রাত ৯ টায় প্রসূতিতে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এক পর্যায়ে তাকে কোন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই অনভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে ভুল অপারেশন করার ফলে অপারেশন থিয়েটারে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তড়িঘড়ি করে হাসপাতালের লোকজন দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরে সু্ন্দরবন হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হাসান রিয়াজ নিহত প্রসূতির স্বজনদের সাথে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দফারফা করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এমন ধরণের যে কোনো অপারেশনে সার্জনের সহকারী অবশ্যই একজন এমবিবিএস ডাক্তার থাকতে হবে। প্রতি ১০ শয্যার হাসপাতালে কমপক্ষে তিনজন নিবন্ধিত মেডিকেল অফিসার থাকতে হবে এবং স্বীকৃত ডিগ্রীধারী এনেস্থেশিওলজিস্ট ছাড়া এনেস্থেশিয়া প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সুন্দরবন হাসপাতালে ছিল না কোনো ডিউটি ডাক্তার, সার্জনের সহকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন না কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক, এমনকি অপারেশন থিয়েটারে ছিল না মনিটরিং সিস্টেম, ব্লাড প্রেসার মেশিন, পালস অক্সিমিটার বা অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর।

হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার ভয়ঙ্কর ধরণের অনিয়ম দেখতে পান। ওটিতে অ্যানেসথেসিয়া যন্ত্রপাতি অকেজো ও বিকল অবস্থায় দেখতে পান। তার মানে রোগীকে অপারেশন করার সময় অ্যানেসথেসিয়া যন্ত্র চালু না করে এবং কোন অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকলেও রোগীকে অপারেশন করা হয়। এক পর্যায়ে রোগী ইমার্জেন্সি সেবা চালু না থাকায় রোগীকে অনেক সময় মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়।

এলাকাবাসী বলছেন, সরকারি নিয়ম মেনে যদি চিকিৎসা সেবা প্রদান সংক্রান্ত বিধি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এসব প্রজ্ঞাপন বা বিধি কাদের জন্য ?

ভুক্তভোগী পরিবার এবং মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, ঘটনাটির নিরপেক্ষ তদন্ত, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের শাস্তি, হাসপাতালের পরিচালক”সহ সকলের শাস্তি এবং নীতিমালা অনুসারে সকল বেসরকারি ক্লিনিক পুনর্মূল্যায়ন ও লাইসেন্স যাচাই করে দেখার জন্য জোরালো দাবি জানান।

এ বিষয়ে ওই হাসপাতালে গিয়ে দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হাসান রিয়াজের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার পাল জানান, একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু খু্বই হৃদয় বিদারক। হাসপাতাল পরিদর্শনের দেখা গেছে ক্লিনিক চালানোর মতো সরকার নির্ধারিত কোন প্রকার উপযোগী যন্ত্রপাতি নেই। অপারেশন চলাকালীন তিন জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কেউ ছিল না। আজকে এখনো কাউকে পাওয়া যায়নি। যে কারণে ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করা হলো। পরবর্তীতে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো প্রকার অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

উল্লেখ, ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৫ জন প্রসূতি রোগী ভুল চিকিৎসায় প্রাণ হারিয়েছেন। তা ছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতালে চিকিৎসার নামে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও বিগত সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কতিপয় প্রভাবশালী নেতা ও সুবিধাবাদী সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে এমন ধরনের ভয়ংকর অনিয়ম করে আসছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে এমন অব্যবস্থাপনায় হাসপাতাল চলছে বলে মনে করেন সচেতনমহল

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com