চাঁদা না দেওয়ায় নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে হাসপাতালের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত। শনিবার (৩১ মে) বিকাল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে আতঙ্কিত হয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ ফেলে এলাকা ত্যাগ করেন। উন্নয়ন কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারও হুমকির মুখে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ রেলওয়ে হাসপাতালটি প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো। দীর্ঘ অবহেলার পর অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রায় ৬৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আওতায় হাসপাতালটিকে আধুনিকায়ন করে জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
গত ২০ দিন ধরে প্রতিদিন প্রায় ২০ জন শ্রমিক এই প্রকল্পে কাজ করছেন। ঘটনার দিন দুপুরে ৪ জন অজ্ঞাত যুবক মোটরসাইকেলে এসে সরাসরি নির্মাণস্থলে প্রবেশ করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। শ্রমিকদের সর্দার রাজমিস্ত্রী রবিউল ইসলাম জানান, দুর্বৃত্তরা নিজেদের বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, “ঠিকাদার আমাদের নম্বর জানে, তার সঙ্গে যোগাযোগ করুক। আমাদের অনুমতি ছাড়া এখানে কোনো কাজ চলবে না।”
ঠিকাদার সাজু আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, “তারেক ও গুড্ডু নামে পরিচিত দুই ব্যক্তি আমাকে একাধিকবার ফোন করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছে। না দিলে কাজ বন্ধ করে দেবে বলে হুমকি দেয়। আজ তারা সরাসরি এসে শ্রমিকদের ভয় দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে আমার পূর্ব প্রস্তুত করা নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে এবং শ্রমিকরাও ভীত হয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “যদি চাঁদা দিয়েই কাজ চালাতে হয়, তবে আমার পক্ষে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমি চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
এ বিষয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডব্লিউ) শরিফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে এখনও পর্যন্ত ঠিকাদারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিতভাবে জানালে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়রা জানান, গুরুত্বপূর্ণ একটি উন্নয়ন প্রকল্প এভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। তারা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।