কুষ্টিয়ায় শহরের পিটিআই রোডে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মাহবুবুল আলম হানিফের বাসার সামনে ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। তবে শহর যুবলীগ নেতা সজিবুর রহমান সজিবের নেতৃত্বে ১৫-১৭ জনের ওই মিছিলে ১০ জনই ছিল মাটিকাটা শ্রমিক।
রোববার (০১ জুন) সকালে পিটিআই রোডে এ মিছিলটি বের হয়। পরে এ ঘটনায় ১০ শ্রমিককে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে ৮ জন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও দুজন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
আটক হওয়ারা হলেন- কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া বাড়াদী এলাকার সালাম সর্দার, আলতাফ শেখ, সূর্য শেখ, আলম খান ও মোতালেব, কয়া কালোয়া গ্রামের ফরিদ বেপারি, বাড়াদি বানিয়াপাড়ার সাইদুর রহমান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের নজিম উদ্দিন মন্ডল এবং বোয়ালদাহ মেছোপাড়ার আব্দুল খালেক।
জানা যায়, রাস্তায় বালি সরানোর কথা বলে শ্রমিকদের ডেকে নিয়ে আসে শহর যুবলীগ নেতা সজিবুর রহমান সজিব। সেখানে গিয়ে ওই যুবলীগ নেতা শ্রমিকদের বলে সারাদিন কষ্ট করে মাটিকাটা লাগবে না, তোমরা এক মিনিট মিছিল করলেই পুরো টাকা পেয়ে যাবে। গ্রামের সহজসরল মানুষগুলো তাদের ফাঁদে পা দিয়ে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে যোগ দেয়।
আটককৃত শ্রমিকদের স্বজনরা জানান, রোববার সকালে শহরের ছয় রাস্থার মোড় থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তি বালি সরানোর কথা বলে ১০ জন শ্রমিককে ৬০০ টাকা হাজিরায় কুষ্টিয়া পিটিআই রোডে ডেকে নিয়ে যান। পরে সেখানে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি শ্রমিকদের বলেন সারাদিন কষ্ট করা লাগবে না, এখানে দাঁড়ালেই পুরো টাকা পেয়ে যাবে। সেখানে কয়েকজন একটি ব্যানার নিয়ে শ্রমিকদের পেছনে দাড় করিয়ে দেয়।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা পালিয়ে গেলেও শ্রমিকরা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার (ওসি) ইনচার্জ মোশারফ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ভাড়া করে এনে মিছিলের চেষ্টা করা হয়েছিল। পুলিশের তৎপরতায় তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘১ জুন সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন পিটিআই রোডে আওয়ামী লীগের ডামি এমপি মাহবুবুল আলম হানিফের বাসার সামনে ১৫-১৭ জন মিছিল করে। এর মধ্যে ১০ জন ছিল মাটিকাটা শ্রমিক। এই শ্রমিকদের মাটি কাটার কথা বলে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর তাদের বলা হয়, সারাদিন কষ্ট করে মাটিকাটা লাগবে না, তোমরা ১ মিনিট মিছিল করলেই পুরো টাকা পেয়ে যাবা। গ্রামের সহজসরল মানুষগুলো ভাবে, সারাদিন কষ্ট না করে যদি ১ মিনিট মিছিল করে টাকা পাওয়া যায়, তাহলে তো ভালোই, কেউ তো আর দেখছেনা। তাই তারা ১ মিনিটের মিছিলে অংশগ্রহণ করে।’
‘কিন্তু এরা জানত না, ফেসবুকে ভিডিও ছাড়লে তাদের সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। পরে খবর ছড়িয়ে পড়লে তারা আটক হয়। এবং পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়। আ.লীগের লোকেরা এভাবে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলছে। এদের আইনজীবীর পেছনে খরচ করার সামর্থ্য নেই। এ মানুষগুলোর ১ দিন কাজ না করলে চুলোয় আগুন জ্বলে না, স্ত্রী সন্তানের পেটে খাবার জোটে না। অথচ মানুষগুলো সামান্য লোভে আজ বিপদে! এ বিষয়ে সচেতনতা জরুরি।