সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ মুক্ত হয়েছে। একইসঙ্গে মুক্ত হয়েছেন জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই। তারা সকলেই সুস্থ রয়েছেন। জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ৩৫ মিনিটে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
২৩ নাবিক অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পান
মিজানুল ইসলাম বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমরা সুসংবাদটি পেয়েছি। জলদস্যুদের হাতে আটক থাকা আমাদের জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ২৩ নাবিকই অক্ষত ও সুস্থ আছেন। ঈদের আগেই নাবিকদের মুক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে কিছু জটিলতার কারণে সামান্য বেশি সময় লেগে গেছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
মিজানুল ইসলাম আরো জানান, মুক্ত হওয়া ২৩ নাবিককে বিমানে করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা স্বজনদের কাছে ফিরে যেতে পারবেন।
জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবিমতোই একটি বিমান বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। বিমানটির কর্মকর্তারা জাহাজের ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলেন। জলদস্যুরা স্পিডবোটে করে এসব ব্যাগ কুড়িয়ে নেয়। পরে সব দিক নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়। তবে মুক্তিপণ কত দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সেখানে নতুন নাবিকরা জাহাজের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান জানান, সমঝোতার পর জলদস্যুরা নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দিয়েছে। মুক্তি পাওয়ার পর এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজের আশপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।
গত ৪ মার্চ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ জাহাজটির সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই গত ১২ মার্চ সোমালি জলদস্যুরা জাহাজটি আটক করে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যায়। জাহাজটিতে থাকা ২৩ নাবিককেও জাহাজেই আটকে রাখা হয়।
১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার দৈর্ঘ্যের ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজটি নির্মিত হয় ২০১৬ সালে। তবে সে সময় জাহাজটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিং গত বছর জাহাজটি কিনে নিয়ে বিভিন্ন রুটে পণ্য পরিবহণ করে আসছিল।