উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে আমাদের দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি নতুন করে বলার কিছু নেই সেটা আমরা সবাই জানি।তবে এই প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত অভিমত থেকে কিছু কথা বলার প্রয়োজনবোধ করছি-
আপনি যদি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হয়ে থাকেন, তবে সে রাজনৈতিক দলের যেকোন সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে দলীয় স্বার্থে তা মেনে চলতে হবে এবং দল যে কর্মসূচী বা নির্দেশনা দিবে তা পালন করতে হবে।দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেয়া, মেনে চলা ও পালন করাটাই একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শ কর্মীর পরিচয়।
অন্যদিকে, একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন নেতা বা কর্মী হয়েও আপনি যদি দলীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে ব্যক্তিস্বার্থের ক্ষুদ্রপ্রাপ্তির লোভে দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করেন তবে আপনি নৈতিকভাবে সে দলের কর্মী হবারও যোগ্যতা হারাবেন।
এক্ষেত্রে তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে সেক্ষেত্রে আপনাদের উচিত নিজ থেকেই অব্যাহতি নিয়ে নেয়া।এতে আপনি আপনার যেকোন সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নিতে পারেন।তাতে কেউ বাধাও দিবে না, বলারও কিছু থাকবেনা।
বলার থাকে তখন যখন আপনি,
দলেও থাকবেন, দায়িত্বশীল পদও নিবেন, আবার দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেয়ে দলের নীতির সাথে সাংঘর্ষিক এমন কর্মকান্ডে যুক্ত হবেন এটা তো হতে পারেনা!
কেননা আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছি, সেই ফ্যাসিস্ট, জালিম সরকার ও শাষকগোষ্ঠীর সকল অন্যায় অত্যাচার জুলুমের হাতিয়ার যারা, সকল অন্যায় অপরাধের সমান অংশীদার যারা তাদের স্বার্থে যেকোন কাজে যুক্ত হওয়ার অর্থ আপনি নীতিগতভাবে পরাজিত।
ভেবে দেখুন-
কত জীবনের বিনিময়ে, কত রক্ত ঝড়িয়ে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে, সুন্দর ভবিষ্যত বিসর্জন দিয়ে যারা দীর্ঘ সময় ধরে এই সংগ্রাম করে আসছে তারা প্রত্যেকেই কতটা অত্যাচারিত, কতটা নিপীড়িত, কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে ক্ষতি কখনো পূরণ করা যাবেনা। তবুও তারা কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়নি, হার মেনে নেয়নি।
হয়ত আমাদের বিজয় অর্জনটা হাতের কাছে এসেও দূরে সরে গেছে, তার মানে এই নয় যে সেই বিজয়টা আমরা আবার অর্জন করতে পারবো না!আমরা পারবো কেননা সত্য ও ন্যায়ের পথের সংগ্রাম কখনো ব্যর্থ হয়না, তবে অনেকক্ষেত্রে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের সময়টা একটু বেশী নেয়, কিন্তু সফল হয়ই হয়।এটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমানিত সত্য।
সেই সত্যের পথে দীর্ঘ এক সংগ্রামের শেষে সফলতার সে বিশ্বাসের শক্তি ও সম্ভবনার আলো তখনই বিজয়ের দুয়ার খুলে দিবে যখন আমরা আমাদের লক্ষ্যে এক ও অভিন্ন হয়ে লড়বো।
কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আমাদের দলের যে সংগ্রাম, সে সংগ্রামের যে লক্ষ্য, সে লক্ষ্য অর্জন ও সফলতা পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাড়াচ্ছি আমরাই বুঝে বা না বুঝেই।কেননা আমরাই ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থে দলের বৃহত্তর স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছি, কেউ স্বজ্ঞানে, কেউ বিভ্রান্ত হয়ে, কেউবা ভুল করে।
যারা স্বজ্ঞানে করছেন প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে যাই বলুক না কেন আসল সত্য হলো তাদের ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে কিছু নয়, না দল না দেশ।এদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও আদর্শ ভিন্ন হলেও রাজনীতিতে এবং দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত ও প্রভাবিত করায় সক্ষম।
তাই এদের বিষয়ে খুব সতর্ক থাকবেন এবং মনে রাখবেন- বিএনপি হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধোকা দেয়া যতটা সহজ ততটা আওয়ামীলীগ হয়ে সম্ভব না।তাই তারা বিএনপিতে থেকেই আওয়ামীলীগ দ্বারা ও আওয়ামীলীগ তাদের দ্বারা লাভবান হয় এবং হচ্ছে।
তাদের সাথে যারা,
ভুল করে বা না বুঝে অথবা কারো দ্বারা বিম্ভ্রান্ত হয়ে কিংবা কোনভাবে প্রভাবিত হয়ে ভুল পথে যাচ্ছেন, তাদের কাছে আহবান নিজের বিবেকের কাছে নিজেই প্রশ্ন করুন-
এরাই কি তারা নয় এখনো যাদের হাত থেকে মুছে যায়নি আমাদেরই রক্তের দাগ?
এরাই কি তারা নয় যারা দানব-সরকারের পূজারি?
এরাই কি সে দল নয় যে দল এদেশের মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে লাশ আর রক্তের উপর দাঁড়িয়ে পৈশাচিক ক্ষমতায় নিজেদের করেছে ক্ষমতাবান?
তাদের মন্দিরে পূজো দিয়ে নিজের ঈমান নষ্ট করবেন না।