লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম হাড়িঙাঙ্গায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদ্রাসাপড়ুয়া দশ বছরের এক শিশুছাত্রকে (যৌন নিপীড়ন) বলাৎকারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছেন বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের পশ্চিম হাড়িঙাঙ্গা কলোনি সংলগ্ন দারুল উলুম বাবুস সালাম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।অভিযুক্ত শিক্ষক খায়রুল আলম ওরফে সোহেল রানা ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে মাদ্রাসা কমিটিসহ মাদরাসার মোহতামিম জুবায়ের হোসেন সাদ্দাম ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়াসহ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবাকে ডেকে এনে কৌশলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ভয়ভীতি দেখার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।অন্যদিকে পুরো ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং মাদরাসা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে জানা গেছে।ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা বলেন, আমার ছেলেকে কোরআনে হাফেজ করার উদ্দেশ্যে গত একমাস আগে
দারুল উলুম বাবুস সালাম মাদ্রাসায় নাজেরা বিভাগে ভর্তি করাই। মাদ্রাসার বোর্ডিংয়ে থেকে লেখাপড়া করত সে। গত রোববার রাতে এই নাবালক শিক্ষার্থীকে খায়রুল আলম বিছানা পরিবর্তন করার কথা বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পাশে শুয়ে পরে উলঙ্গ করে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। এরপর এ ঘটনা অন্য কাউকে না জানাতে হুমকি দেন তিনি।
ভুক্তভোগীর বাবা ও তার দাদি আরো জানান, এ ঘটনার ব্যাপারে মাদ্রাসার মোহতামিম জুবায়ের হোসেন সাদ্দামকে মৌখিকভাবে জানানো হলে তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে সত্যতা যাচাই করার কথা বলে আমাদেরকে মাদরাসায় ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। এসময় মোহতামিম জুবায়ের হোসেন মাদরাসা ছাত্রের ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলে ভয় দেখান বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দাদি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদ্রাসার এক অভিভাবক বলেন ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক খায়রুল আলম ওরফে সোহেল রানাকে মাদরাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এবিষয়ে ওই মাদ্রাসার মোহতামিম জুবায়ের হোসেন সাদ্দাম পুরো ঘটনাটিকে মিথ্যা দাবি করে গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে বলেছেন আমি এই কাজে জড়িত নই। পরে অভিযোগকারীর সাথে মিমাংসা হয়েছে এবং তারা সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়েছেন বলে জানান মোহতামিম জুবায়ের হোসেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এর আগেও অন্য এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বল্যাৎকারের অভিযোগ উঠে এলে আমরা সেই শিক্ষককে মাদরাসা থেকে বহিষ্কার করি। বারবার একই মাদরাসায়
শিক্ষার্থীকে বল্যাৎকারের ঘটনা কেন ঘটে? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুকের মুঠোফোনে কল করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।