ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রেকর্ডরুমের মূল্যবান নথিপত্র তছনছ করে ১২টি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। শহরের জজ কোর্ট, জেলা প্রশাসকের বাসভবন ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশে অত্যন্ত সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত এ রেকর্ডরুম থেকে ল্যাপটপ চুরির একদিন পরে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
রেকর্ড রুমের (মহাফেজখানা) রেকর্ড কিপার আবু বকর সিদ্দীক বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে মামলাটি করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাতের কোনো একসময় এ চুরির ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহারে রেকর্ড কিপার আবু বকর সিদ্দীক উল্লেখ করেন, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে তিনি এবং তার দুজন সহকর্মী বাহাদুর আলম ও কাওছার আলী অফিসে পৌঁছান। কাওছার আলী গেটের তালা খুললে গেটের ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পান, নিচতলার অফিস কক্ষের গেটের প্রথম কাঠের দরজার কব্জা ভাঙা এবং অপর পাশের কয়রার সঙ্গে তালা লাগানো রয়েছে। কেচি গেটের তালা অক্ষত অবস্থায় ছিল। ওই গেটের তালা খুলে তারা তিনজন দোতলায় উঠে প্রথম দরজার তালা ভাঙা এবং দ্বিতীয় লোহার গেটের তালা কাটা অবস্থায় দরজা খোলা দেখতে পান।অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র মেঝেতে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে ছিল। অফিসের আলমারি ভাঙা এবং খোলা ছিল। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার রুমের স্টিলের আলমারি ও ভাঙা এবং খোলা দেখতে পান তারা। পরে খোঁজ করে দেখা যায়, অফিস কক্ষের পাঁচটি টেবিল থেকে পাঁচটি ল্যাপটপ, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আলমারি থেকে চারটি ল্যাপটপ ও অফিস সহকারী মিজানুর রহমানের আলমারি থেকে তিনটি ল্যাপটপসহ ১২টি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রেকর্ডরুমের উচ্চ সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা ( নাজির ) মকলেছুর রহমান জানান, দোতলা ভবনবিশিষ্ট রেকর্ড রুমের দোতলায় দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি কক্ষ থেকে এ চুরির ঘটনা ঘটে। থানায় জিডি করা হয়েছে । আমাদের সিসি ক্যামেরা নেই তবে পুলিশের সিসি ক্যামেরায় চোরদের শনাক্তকরনের কাজ চলছে ।
তিনি আরো জানান , আমাদের ডিসি অফিসে নাইট গার্ড আছে কিন্তু রেকর্ড রুমের নির্ধারিত নাইট গার্ড নেই ।
ফরিদপুরের রেকর্ডরুম শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লিটন আলী জানান, এ ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও ভবনের ক্রুটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রামানন্দ পালকে আহ্বায়ক করে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) দীপ জন মিত্র ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সাজিদুল মাহমুদ। কমিটি মঙ্গলবার থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান , রেকর্ড রুমের চুরির বিষয়ে মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। আশা করছ ২/১ দিনের মধ্যে চোরদের শনাক্ত করতে পারবো ।