গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের জয়দেবপুর জংশন রেললাইন সংলগ্ন স্থানে পুলিশের ধাওয়ায় দৌড় দিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারিয়েছেন এক লেবু বিক্রেতা।মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর জংশনের পাশে বসে পরিতোষ নামের এক ব্যাক্তি লেবু বিক্রি করছিলেন। হঠাৎ পুলিশের ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে তার পায়ের গোড়ালি থেকে কাটা পড়েছে।
আহত লেবু বিক্রেতা পরিতোষ চক্রবর্তী (৪৫) নওগাঁ সদর আত্রাই এলাকার বাসিন্দা। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিতোষ রেলাইনের পাশে অনেকের মতো নিয়মিত হকারি করে লেবু বিক্রি করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার ওই স্থানে লেবু বিক্রি করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে সে তার লেবুগুলো অল্প অল্প করে বিক্রির উদ্দেশ্যে পলিথিনে ভরছিলেন। এসময় পুলিশ গিয়ে তাকে লাঠি দিয়ে পায়ে বাড়ি দেয়। আত্মরক্ষার্থে পরিতোষ ওইস্থান থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যায়। এসময় ওই পুলিশ তাকে লাথি মারলে সে রেললাইনের উপরে পড়ে যায়। তাৎক্ষণাৎ একটি ট্রেন তার পায়ের উপর দিয়ে চলে গেলে পায়ের গোড়ালি থেকে কেটে যায়। ট্রেন চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তাকে ধাওয়া দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, গাজীপুর সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জহির।
ট্রেনে কাটা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শহিদুল্লাহ হিরো। তিনি বলেন, পুলিশ দেখে দৌড়ে পালাতে গিয়ে এক লেবু ব্যবসায়ী দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় পরিতোষ নামের ওই ব্যক্তিকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র বা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়। ধারণা করা হচ্ছে পরিতোষ বেঁচে গেলেও তার পায়ের গোড়ালি রাখা যাবে না।
মহানগরীর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ রাফিউর ইসলাম বলেন, রেলক্রসিং এলাকায় যাতে হকার না বসতে পারে তার জন্য সেখানে প্রতিদিন পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। ওই হকার পুলিশ দেখে ভয়ে দৌড়ে যাওয়ার সময় তার পা ট্রেনের নিচে পড়ে। তাকে ধাওয়া দেওয়া হয়নি। আহত ওই ব্যাক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মানবতার কারণে আমরা তার খোঁজখবরও রাখছি। তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।