1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
একুশ বছরের রক্তগাথা: ১০ জন নিহত, বিচার নেই ষান্মাসিক সাথী সমাবেশ ২০২৫: নতুন উদ্যমে অগ্রসর হওয়ার প্রত্যয় ঠাকুরগাঁওয়ে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ৩ বিষয়ে ফেল প্রয়াত সাংবাদিক আব্দূর রহমান পরিবারের উপর বাড়ী-ঘর হামলা সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রফিকের জানাজা সম্পন্ন সারাদেশে চিরুনি অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গুম,খুন,হত্যাসহ এমন কোন নির্যাতন নাই যা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা’র সরকার করে নাই – নাহিদ ইসলাম ময়মনসিংহকে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে- ডিসি মুফিদুল আলম বিএনপির গনতন্ত্র অনু্যায়ী কেউ ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচন করতে হলে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হতে হবে জনগনের প্রতি দ্বায়বদ্ধতা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড বিবেচনায় বদলে যাচ্ছে পিরোজপুর-১ আসনের নির্বাচনী সমীকরণ “জনপ্রিয়তার শীর্ষে মাসুদ সাঈদী”

কাউখালীতে সেনাবাহিনীর তল্লাশি- লুটপাটের অভিযোগ, এলাকাবাসীর ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ

এস চাঙমা সত্যজিৎ
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ডেবাছড়ি গ্রামে দু’জন মুখোশ দুর্বৃত্তকে সাথে নিয়ে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য তিন গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাশি, জিনিসপত্র লুট ও নারীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। আজ শুক্রবার (৭ মার্চ ২০২৫) এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা হলেন- জ্ঞান চাকমা, পিতা- হামিস কুমার চাকমা, সুপন চাকমা, পিতা- কৃষ্ণ চাকমা ও হেমন্ত চাকমা, পিতা- যামিনী চাকমা। সেনারা তাদের বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করে দেয়। জানা গেছে, আজ ভোরের দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ডেবাছড়ি গ্রামে হানা দেয়। এ সময় তারা উক্ত ব্যক্তিদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। সেনারা জ্ঞান চাকমার বাড়িতে তল্লাশিকালে তার স্ত্রী অনিকা চাকমা ও তার ১৪ বছরের মেয়ে নমিত্রা চাকমা বিনা কারণে বাড়িতে তল্লাশির প্রতিবাদ জানালে সেনা সদস্যরা তাদেরকে লাঞ্ছিত করে করে। পরে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের নারীরা স্বতঃস্ফূর্ত ও তাৎক্ষণিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেখানে এসে প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদের মুখে সেনারা কাউখালি সদর ফিরে যাওয়ার সময় এলাকার শত শত নারী-পুরুষ উজো উজো শ্লোগান দিয়ে তাদের পিছু ধাওয়া করে তালুকদার পাড়ার কাছে অবস্থিত নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প পর্যন্ত নিয়ে যায় এবং সেখানে ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভকালে জনগণকে বলতে শোনা যায়, সেনাবাহিনী তিনজনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সেনাবাহিনীকে দেশের “গর্বিত সন্ত্রাসী” বলতেও শোনা যায়। উত্তেজিত জনতা সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে আরো বলেন, সেনাবাহিনী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের (মুখোশ দুর্বৃত্তদের) পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে মুখোশ দুর্বৃত্তদের জনগণের হাতে তুলে দেয়ার দাবি জানান এবং লুটে নেয়ার জিনিসপত্র ফেরত দিতে বলেন। বিক্ষোভের মাঝের সময়ে একদল পুলিশ সদস্যও উপস্থিত হয়। তাদেরকে উত্তেজিত জনতার সাথে কথা বলতে দেখা যায়। বিক্ষোভ-প্রতিরোধে রাঙিপাড়া, ডেবাছড়ি, উল্লো, পানছড়ি, হাজাছড়ি, শুকনাছড়ি, তালুকদার পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৫ শতাধিক নারী পুরুষ অংশ নেন। বিক্ষোভ সমাবেশে এক গৃহিনী ও অপর এক ব্যক্তি বক্তব্য দেন। প্রতিরোধকারী নারীরা সেনাদের সাথে থাকা মুখোশ সন্ত্রাসীদেরকে তাদের পরিহিত মুখোশ খুলে দিলে দু’জনের চেহারা প্রকাশ হয়ে পড়ে। এরা হলো ডেবাছড়ি গ্রামের সত্য কুমার চাকমার দুই ছেলে ভাগ্যচন্দ্র চাকমা ও মধুচন্দ্র চাকমা ওরফে মধুক। এ সময় দুই নারী বুজুঙি চাকমা ও মানেকা চাকমা ভাগ্যচন্দ্র চাকমাকে তার অপকর্মের জন্য কড়া সমালোচনা করে প্রশ্ন করেন কেন সে লোকজনকে কষ্ট দেয়ার জন্য এ ধরনের জনস্বার্থবিরোধী ন্যাক্কারজনক কাজ করছে। কিন্তু জনৈক সেনা সদস্য মুখোশ ভাগ্যচন্দ্রের পক্ষ নিয়ে ওই দুই নারীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, জনগণের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ ও মূল ঘটনাকে আড়াল করতে সেনাবাহিনী পরে তড়িঘড়ি করে “ইউপিডিএফের গোপন আস্তানা থেকে ‘অস্ত্র-গোলাবারুদসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার’ দাবি করে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে অপপ্রচার চালায় এবং প্রতিরোধকারী জনগণের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করে। তবে ইউপিডিএফ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর এ দাবিকে নাখোশ করে দিয়ে বলেছেন, সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে এলাকায় নিপীড়নমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারা এ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। অপরদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কাউখালি উপজেলা শাখার সভাপতি শান্তনা চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কাউখালি উপজেলা শাখার সভাপতি রত্না চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে নারীদের লাঞ্ছিত করাসহ সেনাবাহিনীর এহেন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা সেনাবাহিনীর এমন কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নারীদের লাঞ্ছিত করার ঘটনার সাথে জড়িত সেনা ও ঠ্যাঙাড়ে সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং কাউখালিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা অপারেশন ও তল্লাশীর নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সাধারণ নিরীহ জনগণকে হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com