খুলনার কয়রা উপজেলা প্রশাসন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রান্তিক জনপদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এবং শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে উপজেলাটিতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল ও শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর সাড়ে বারটায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক আনন্দঘন পরিবেশে এই বাইসাইকেল ও শিক্ষা বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস। তাঁর হাত ধরেই আদিবাসী শিক্ষার্থীরা নতুন দিনের স্বপ্নপূরণের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ জিএম ইমদাদুল হক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার বর্মন, ইউএনও অফিসের সিএ মোঃ নাজমুল হুদা, খুলনা জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ মুন্ডা, এবং আদিবাসী নেতা বলয় কৃঞ্চ মুন্ডা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের হাতে বাইসাইকেল ও শিক্ষা বৃত্তির চেক তুলে দেন। তিনি বলেন, “এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা কয়রার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং বিদ্যালয়ে যাতায়াতের অসুবিধা দূর করতে চেয়েছি। শিক্ষা ছাড়া একটি জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। তাই আমরা বিশ্বাস করি, এই সামান্য সহযোগিতা তাদের জীবন পথে আরও সাহস যোগাবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আদিবাসী নেতারা উপজেলা প্রশাসনের এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। খুলনা জেলা জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ মুন্ডা বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের এই সহযোগিতা আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। যাতায়াতের কষ্টের কারণে অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে পারত না। বাইসাইকেল সেই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” আদিবাসী নেতা বলয় কৃঞ্চ মুন্ডা বলেন, “আমরা উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই ধরনের সহযোগিতা আমাদের সম্প্রদায়ের মনোবল আরও দৃঢ় করবে। শিক্ষা বৃত্তি ও বাইসাইকেল হাতে পেয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তারা জানায়, এখন থেকে বিদ্যালয়ে যেতে তাদের আর কষ্ট হবে না এবং তারা আরও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে। উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ কয়রার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের আরও উৎসাহিত করবে বলে আশা করা যায়।