ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের আওতায় পাঁচ ভিক্ষকুকে দোকান ও অটোরিকশা প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (১৩অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের বাস্তবায়নে এই কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার ৫জন ভিক্ষুকের হাতে পুনর্বাসনের এসব উপকরণ তুলে দেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয় সুত্র জানিয়েছে – উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের সুহিলা গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র আলম মিয়া, শশি কান্তর পুত্র শ্যামল চন্দ্র ঘোষ পরানগঞ্জের ছাতিয়ানতলা গ্রামের জমিলা খাতুনকে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাসহ ঘাগড়া ইউনিয়নের সুহিলা গ্রামের সামেদ আলীর পুত্র আব্দুল খালেককে ৭০হাজার টাকা ব্যায়ে নতুন দোকান সহ ৫৮ আইটেম ও আলাল উদ্দিনের মেয়ে শাপলা আক্তারকে দোকান মেরামতসহ ৪৫ হাজার টাকার ৫৭ আইটেমের মনোহারী দোকানের মালামাল পন্যসহ মোট ৫ জনকে ৩ লক্ষ ৪০হাজার টাকা ব্যয়ে
ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এসব উপকরণ তুলে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রিন্সের সভাপতিত্বে উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যেে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি আসলে কোনো সম্মানজনক নয়, সমাজে একে কেউ ভালো চোখে দেখে না। রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে না। তবে জীবনের টানাপড়েন ও নানা কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ে। সচেতন উদ্যোগ ও সঠিক পদক্ষেপ নিলে তাদের সহজেই ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বের করে এনে সম্মানজনক কর্মসংস্থানে যুক্ত করা সম্ভব। এই পুনর্বাসন কার্যক্রম ভিক্ষুকদের আত্মনিভর্রশীল জীবনের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দোকান পেয়ে মো. আব্দুল খালেক বলেন, বৃদ্ধ বয়সে এখন আর কাজ করতে পারি না। গত ৫-৬ বছর ধরে ভিক্ষা করতাম। এখন স্যারেরা একটা দোকান দিয়েছে। এখন আর ভিক্ষা করার কোনো ইচ্ছে নেই।’
ঘাগড়া ইউনিয়নের আলাল উদ্দিনের মেয়ে শাপলা আক্তার- সে একজন প্রতিবন্ধী।শাপলার কাজ করার মতো শক্তি নেই। একবার বসলে উঠে দাড়াতেও পারে না,চলাফেরা করার মতো সামর্থ্য নেই শাপলার, যেকারণে তেমন ভিক্ষাও করতে পারেন না। দোকানটা তার জীবিকার উৎস হবে বলেন শাপলার মা নুর জাহান খাতুন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাকসুদা খাতুন জানান-সরকারের একটি লক্ষ্য হলো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে আসা। সদর উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাদের এই অটোরিকশা ও দোকানঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সব ভিক্ষুককে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় অন্যান্যদের মাঝে সহকারী কমিশনার ভূমি সৈয়দা তামান্না হুরায়রা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন,উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ, কৃষি কর্মকর্তা জোবায়রা বেগম সাথীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
একই দিনে জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।