করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা রাশিয়াকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিলে প্রথমবারের মতো কোভিড ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) শুরু হতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রোজেনেকা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট দিয়ে এই পরীক্ষা হবে।
ব্রাজিলের হেলথ সার্ভিলেন্স এজেন্সি অ্যানভিসা ও সাও পাওলোর ফেডারেল ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে অক্সফোর্ডের ডিএনএ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে জুন মাসে। অ্যানভিসা জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য দুই হাজার মানুষকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
রেফারেন্স সেন্টার ফর স্পেশাল ইমিউনোবায়োলজিক্যালস-এর সমন্বয়ক লিলি ওয়েক্স বলেন, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। সংক্রমণ ঠেকাতে না পারলে মৃত্যু আরও বাড়বে। সাও পাওলোতেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। করোনা সংক্রমণের এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে সাও পাওলো। সেখান থেকেই কোভিড ট্রায়ালের জন্য হাজার জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্টের টিমের তৈরি ভেক্টর ভ্যাকসিনের ক্নিনিক্যাল ট্রায়াল রেসাস প্রজাতির বানরের উপর ব্যর্থ হয়েছে। এই বানরের শরীরে কোভিড সংক্রমণ রুখতে না পারলেও নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করেছে এই ভ্যাকসিন। মানুষের শরীরে কীভাবে এই ভেক্টর ভ্যাকসিনের প্রয়োগ সফল হবে সেই নিয়ে বৃহত্তর গবেষণা চলছে অক্সফোর্ডে। গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্ট, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড, টেরেসা লাম্বে, ডক্টর স্যান্ডি ডগলাস ও অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল। অ্যাস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে নতুন করে ভ্যাকসিনের ডিজাইন করছে অক্সফোর্ড।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে অ্যাস্ট্রোজেনেকার ইউনিটে তৈরি হচ্ছে এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট। তত্ত্বাবধানে রয়েছে অক্সফোর্ডের টিম। চলতি মাসেই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির পরিসংখ্যান অনুসারে, ব্রাজিলে এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫৬২। সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি মানুষের।
ব্রাজিলের করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সিস ডিরেক্টর মাইক রায়ান বলেছেন, লাতিন আমেরিকার বহু দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ে চিন্তার কারণ রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাজিল।