অবশেষে কেন্দুয়া উপজেলায় কর্মরত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপিকে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে বদলি করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ে ৬ মার্চ ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত পত্রের অনুমতির প্রেক্ষিতে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপিকে সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক প্রশাসন-২ এ,এস,এম সিরাজুদ্দোহা স্বাক্ষরিত এক পত্রে প্রশাসনিক কারণে বদলির এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চলতি বছরের গত ২৩ জানুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভাগীয় উপ-পরিচালক ময়মনসিংহ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জামিরুল হক সহ অন্যান্য শিক্ষকরা। তাদের দাবী সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপি তার ক্লাস্টারের শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ফাইল নিয়ে চেকে স্বাক্ষর আনতে গেলে টাকা ছাড়া তিনি চেকে স্বাক্ষর দেন না। বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে ভালভাবে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করতে হয় এবং আসার সময় টিফিন ক্যারিয়ার ভরে খাবার দিয়ে দিতে হয়।
এর আগে গত বছরের জুন মাসে শিক্ষক সমাজের একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন নেত্রকোনার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহমিনা খাতুনের নির্দেশে মদন ও পূর্বধলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে সরেজমিনে একটি তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এই তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ কর্তপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষা অধিপ্তরে মহা পরিচালক বরাবর জমা দেওয়া ছিল।
তাছলিমা বেগম লিপির বিষয়ে জানতে চাইলে তৎকালীন নেত্রকোনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বর্তমান সহকারী পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ময়মনসিংহ তাহমিনা খাতুন বলেন, তদন্তে অভিযোগে সত্যতা ছিল। যে জন্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভাগীয় উপ পরিচালক মোঃ আলী রেজার ভাষ্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা মিলিছে। তাকে অন্যত্র বদলির জন্য সুপারিশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর প্রতিবেদন জমা দেওয়া ছিল।
কেন্দুয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপির বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ ছিল। তিনি শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেছেন এমনটি দাবি করেছেন শিক্ষক সমাজ। তাছাড়া শিক্ষা অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীরাও তার আচরণগত দিক দিয়ে অনেক অসন্তুষ্ট ছিলেন। গত ১৩ মার্চ প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নির্দেশ মোতাবেক তাছলিমা বেগম লিপি কেন্দুয়া কর্মস্থল ছেড়ে চলে গেছেন।এ ব্যাপারে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপির সাথে যোগাযোগ করা হলে সোমবার তিনি বলেন, আমাকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করা হয়েছে। আমি কেন্দুয়া থেকে চলে এসেছি। আগামী সপ্তাহে আমি সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় কর্মে যোগদান করব।