পুরোনো ভাঙ্গা জরার্জীণ একটি ঘর, রোদ উঠলেই ভাঙ্গা টিনের চালা দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করে ঘরে। বৃষ্টি হলে বাহিরে পানি পড়ার আগেই পানিতে তলিয়ে যায় ঘরটি। কোনদিন দু‘বেলা আবার কোনদিন একবেলা খেয়ে করছেন দিনপার। আর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলে পুরো পৃথিবীই অন্ধকার হয়ে আসে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামের বিধবা বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুনের। কারন তার এই ঘরটাই যে তার পৃথিবী। একটু ঝড় তুফান হলেই ঘরটা পড়ে যাবে তার। প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে ঝড় বৃষ্টি থেকেতার ঘরটিকে রক্ষা করতে প্রার্থনা করেই দিনপার করছেন তিনি।
সাফিয়া খাতুন, বয়স ৬৫ বছর, স্বামী হোরন মিয়া অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বিশ বছর আগে। ২ছেলে আর তিন মেয়ে নিয়ে দুঃখ কষ্টে জীবনযাপন করলেও ১০বছর আগে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বড় ছেলেও মারা যায়। ছোট ছেলেটিও ২বার স্ট্রোক করে শয্যাশায়ী। বড় মেয়ের স্বামীটাও বেঁচে নেই। মেঝো মেয়েটা স্বামীর ঘরে থাকলেও ছোট মেয়েটাকে ফেলে তার স্বামী চলে গেছে। দুটি সন্তান নিয়ে ছোট্ট মেয়েটা পোষাক শ্রমিকের কাজ করে নিজের সংসার চালিয়ে মায়ের জন্য যে সামান্য খরচ দেয় সেটা দিয়েই কোনরকম দিনাতিপাত করছেন বৃদ্ধা সাফিয়া খাতুন। বৃদ্ধা সাফিয়া বেগমের অনুরোধ খাবার অল্প খেয়ে জীবন বাচাতে পারলেও এই ভাঙ্গাচুরা বাশের ঠিকা দেয়া ঘরটা জদি কেউ ঠিক করে দিতো তাহলে স্বামীর ভিটাতে মরতে পারতাম। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন মেয়েটা যখন বাড়ীতে আসে এই ভাঙ্গা ঘরে আতংক নিয়ে থাকি।
বাখরনগর গ্রামের জুয়েল মিয়া বলেন, উনি অনেক বছর ধরে খুব কষ্টে দিরপার করতেছেন। তার ঘরটার এমন করুন অবস্থা যে এমন ঘর আমি কোনদিন দেখিনি। তার ঘরটা যদি ঠিক করে দেয়া যাইতো তাহলে ইে বয়সে কষ্টটা কমে আসতো।
স্থানীয় আনাছ মিয়া বলেন, সাফিয়া বেগমের স্বামী নাই, তার বড় ছেলেটাও মারা গেছে। মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে এই ঘরে থাকে। আমার সাধ্য থাকলে তাকে সহযোগিতা করতাম। সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমার অনুরোধ তাকে একটি ঘর করে দিয়ে সবার উপরে মানুষ সত্য তার উপরে নাই এই প্রবাদটি জেগে উঠুক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করলে তাকে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করা হবে।