বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সদ্য গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একই সময়ে বিএনপিও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও, দল দুটির অবস্থানের ভিন্নতায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
নগর ভবনের সামনে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইশরাকের সমর্থকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বিবিসিকে জানান, প্রয়োজন হলে বিএনপি দলীয়ভাবে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবে।
এদিকে ইশরাকপন্থীরা নির্বাচন কমিশনের সমালোচনার পাশাপাশি এনসিপির ঘনিষ্ঠ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। একই দিন রাতে বাংলামোটরের অস্থায়ী কার্যালয়ে এনসিপির এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে দলটি জানায়, “২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ছিল অবৈধ। এই নির্বাচন থেকেই বর্তমান রাজনৈতিক জটিলতা শুরু, যার জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা।” এনসিপি নেতা আখতার হোসেন বলেন, “কমিশন অতীতে এমন কিছু বক্তব্য দিয়েছে যা একটি বড় রাজনৈতিক দলের অবস্থানের সঙ্গে মিলে যায়।”
তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট মামলায় বিবাদী হয়েও নির্বাচন কমিশন আইনি প্রতিযোগিতায় যায়নি, বরং বাদীপক্ষকে সুবিধা দিয়েছে। কমিশন উচ্চ আদালতে না গিয়ে একতরফা সিদ্ধান্তকে প্রশ্রয় দিয়েছে বলেও মনে করে এনসিপি।
এই প্রেক্ষাপটে এনসিপি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব মেনে কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে রাজপথে নেমেছে।
এর আগেও ‘স্থানীয় সরকার বনাম জাতীয় নির্বাচন’ প্রশ্নে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে বিরোধ প্রকাশ পেয়েছে। কমিশন সংস্কার নিয়েও দুই দলের নেতারা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইশরাক হোসেনের মেয়র পদ নিয়ে তৈরি পরিস্থিতিকে জাতীয় ইস্যুতে রূপ দিতে চায় বিএনপি। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্দিষ্ট সময়সূচিতে নির্বাচন চায় দলটি। সরকার যদিও ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়কাল নির্ধারণ করেছে।
ফলে ইশরাক ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে একটি “রাজনৈতিক শক্তি যাচাইয়ের মঞ্চ” তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।