গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির উপর দিয়ে প্রবাহিত কাচালং নদী তার ভরা যৌবন ফিরে পেয়েছে। নদীর জলস্তর আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো দ্রুত তলিয়ে যাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের গবাদিপশু এবং আবাদি অর্থকরী ফসলের মাঠ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাচালং নদীর গভীরতা দিন দিন হ্রাস পাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর পানি উপচে পড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত বড় ধরনের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে এবং অনেক ফসলি জমি সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষকরা তাদের আবাদ করা ধান, ভুট্টা এবং অন্যান্য অর্থকরী ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। গবাদিপশুগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতেও হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বেশ কিছু ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৎস্যচাষিরাও তাদের মাছের ঘের নিয়ে উদ্বিগ্ন।
নদী গবেষক ও পরিবেশবিদরা বলছেন, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, পাহাড় কাটা এবং অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণের কারণে কাচালং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসছে। জরুরি ভিত্তিতে নদী ড্রেজিং এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদ না করা হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য নদীর গভীরতা বৃদ্ধি এবং পাড় সংরক্ষণে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।