জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাস। ওই অভ্যুত্থান চলাকালে বাবা-ছেলে, মা-মেয়ে এক সাথে আন্দোলনের রাজপথে হাটছে। এমন সময় খুনি হাসিনার নিদের্শের বুলেট সন্তানের কপাল ভেদ করে মাথার পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। সাথে সাথে ওই সন্তান রাজপথে গড়িয়ে পড়ে মাথার মগজ রাস্তায় গিয়ে পড়ে। তিন বছরের বাচ্চা বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিল আন্দোলন কিভাবে হচ্ছে। তাকেও টার্গেট করে খুনি হাসিনার নিদের্শে গুলি করা হয়েছে। এমন শত শত দৃশ্য আমরা দেখেছি। এ দৃশ্যগুলো দেখে একটা অভ্যুত্থান পার করে খুনি হাসিনার মতো ফেরাউনের পতন ঘটিয়ে আজকে আমরা নতুন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি। আপনাদের সন্তানেরা তথা নতুন প্রজন্ম এত বড় ত্যাগ করে আজকে আমরা নতুন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি। এই নতুন বাংলাদেশে আপনাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। এখানে যদি নতুন কোনো ফেরাউনের জন্ম হয় তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর হয়েছে, অভ্যুত্থানের ৯ মাস হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ রক্ত-জীবন দিয়েছে। আপনারা দয়া করে নতুন বাংলাদেশে আর দল কানা হইয়েন না, আর মার্কার প্রতি অন্ধ ভক্ত হইয়েন না। সৃষ্টিকর্তা আপনাদের একটা বিবেক দিয়েছে, দয়া করে বিবেককে কাজে লাগান। আমরা বলব না আপনার এনসিপির অন্ধ ভক্ত হয়ে যান। আমরা কোনো চাঁদাবাজ, সিন্ডিকেট, ক্ষমতার অপব্যবহার, দখলদারিত্ব, কোন রাজনৈতিক দলের পদ-পদবিধারী নেতার দুঃশাসন দেখতে চাই না। বরং আমরা বলব-যে মানুষটা আপনাদের কথা বলে, কাজ করে কখনও দূর্নীতির সাথে জড়িত হয়নি, ঘুষ, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট করে না সেই মানুষকে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। গত ২৮ মে বুধবার রাত ৮টায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরের বাহাদুর বাজার চত্বরে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন-আগামীর বাংলাদেশে দল আর মার্কা দেখে অন্ধের মতো যেন আমরা আর ভোট না দেই। যোগ্য আর ভালো মানুষকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করি, তাহলে বাংলাদেশ ভালো মানুষের হাতে যাবে। যেইদিন দেশ ভালো ও নিরাপদ মানুষের হাতে যাবে সেইদিন ২০২৪ এর অভ্যুত্থানে শহীদ আর আহত যোদ্ধাদের রক্তের প্রতিদান দেয়া হবে। যারা বাংলাদেশে নতুন করে হাসিনার উত্তরসূরী নমরুদ-ফেরাউন হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তারা যে দলের হোক না কেন, যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র উপজেলা প্রতিনিধি মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে বিচার, সংস্কার ও জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে অন্যান্যের মধ্যে এনসিপি’র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা খাতুন মিতু, ইসমাইল হোসেন, মমিনুল ইসলাম, আব্দুর রহমান ইফতি, মির্জা ওবায়দুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় এনসিপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইমামুর রশিদ ইমন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী রাসেল খান, আবু সাঈদ লিয়ন, সাদিয়া ফারজানা দিনা, সদস্য রফিকুল ইসলাম কনকসহ উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।