নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে মাদক। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর অর্ধশতাধিক সংঘবদ্ধ চক্র মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় চৌদ্দগ্রামের মাদক ব্যবসা নিয়ে বহুবার সংবাদ প্রকাশ করা হলেও মাদক ব্যবসা কিছুতেই কমেনি। বরং মাদক পাচার উদ্বেগজনক হারে আরও বহুগুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনুসন্ধানে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছে বলেই উদ্বেগজনক হারে মাদক ব্যবসা বেড়েছে। পুলিশ প্রশাসন প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার না করে নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আলকরা ইউনিয়নের দত্তসার, সোনাইছা, কাইচ্ছুটি, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘড়িয়া, বেতিয়ারা, জগন্নাথ, চিওড়া ইউনিয়নের ডিমাতলী, সুজাতপুর, বাতিসা ইউনিয়নের কালিকাপুর, আনন্দপুর, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার জামে মসজিদ রোড, রামরায়গ্রাম, ঘোলপাশা ইউনিয়নের মতিয়াতলী, আমানগন্ডা, বাবুর্চি বাজার, কালিকাপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, মিরশান্নী, উজিরপুর ইউনিয়নের চকলক্ষীপুর, জগমোহনপুর ও শিবের বাজার এসব এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীর ছড়াছড়ি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকার বিজিবির একাধিক কর্মকর্তা জানান, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চৌদ্দগ্রাম থানার কয়েকজন এসআই মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দিচ্ছে।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, চৌদ্দগ্রামে বর্তমানে মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দেওয়ার মধ্যে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের ভূঁইয়া সবচেয়ে আলোচিত। তাকে ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে তিনি সর্বসেরা।
এছাড়া সাংবাদিক নির্যাতন, ব্যবসায়ী লোকজন টার্গেট করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করেও মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো এসআই আবু তাহের ভূঁইয়ার কাছে এগুলো স্বাভাবিক ব্যাপার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ সালে মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় উঠে এসেছিল আবু তাহের ভূঁইয়ার নাম। তখন তিনি বনানী থানায় কর্মরত ছিলেন। সেই তালিকা পুলিশ সদরদপ্তরে জমা দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থা। পরে তাহের ভূঁইয়াকে বনানী থানা থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি করা হয়েছিলো।
জানা গেছে, বর্তমানে চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের মো. জয়নাল আবেদীন এর ছেলে মো. সালেহ আহমেদ সবুজ (৩০) ও আলকরা ইউনিয়নের বাক গ্রামের ইসমাইল ও শাহিন এসআই আবু তাহেরের মদদে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গত ২৭ আগষ্ট চৌদ্দগ্রাম থানাধীন পূর্ব দূর্গাপুর থেকে মাদক ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম (২২)কে ১০ কেজি গাঁজা ও ১৩ বোতল বিদেশি মদসহ আটক করে এসআই আবু তাহের ও সক্রিয় ফোর্স। পরে আশরাফুলকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে শুধু মাদক উদ্ধারের নাটক সাজায় আবু তাহের। মামলায় আসামি পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি উল্লেখ করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের ভূঁইয়া তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার কাজের জন্য পুলিশ ডিপার্টমেন্টের কাছে পুরুস্কৃত-ও হয়েছি।’ আশরাফুলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে পালাতক, তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলম