ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। অসময়ে নদী ভাঙ্গনের শিকার কুড়িগ্রামে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রাম। গত ১০ দিনে সাতটি বসতভিটা, শতাধিক বিঘা ফসলি জমিসহ গ্রামীণ সড়ক সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। বসত বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব পরিবার গুলো ইতিমধ্যে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বেগম নুরুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর আলহাজ রোস্তম আলী নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, রসুলপুর ঈদগাহ মাঠ শতাধিক বসতবাড়ি, বেগম নুরুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফসলি জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে। রসুলপুর মারকাজ জামে মসজিদ, রসুলপুর আলহাজ রোস্তম আলী নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা, রসুলপুর ঈদগাহ মাঠ, বেগম নুরুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অসংখ্য ফসলি জমিসহ শতাধিক বসতবাড়ি ভাঙনের মুখে। সরেজমিন দেখা গেছে, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ায় অসময়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেকে। ভাঙনের হুমকিতে থাকা পরিবারগুলো তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে স্থানীয়রা জানায়, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনে গত দশদিনে সাতটি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এই গ্রামের দক্ষিণ ও পশ্চিম এলাকায মিলে গত এক মাসে ৭০-৮০টি বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। এসময় গ্রামীণ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় বিচ্ছিন্নের পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে একটি মাদরাসা, একটি মসজিদ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে এলাকার কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পরার আশঙ্কায় স্থানীয়রা। এ অবস্থায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারীভাবে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জমেলা খাতুন জানান, আমাদের একটি দোকান ও একটি ধান ভাঙ্গা মিল ছিল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে সংসারে উপার্জন। এখন সন্তানদের ভরণপোষণে হিমসিম খেতে হচ্ছে। নুরানী মাদরাসার শিক্ষক নাজমুল আহসান বলেন, রসুলপুর মারকাজ মসজিদ ও রসুলপুর নূরানী মাদ্রাসা এলাকার একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে ২০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এ প্রতিষ্ঠান দুটি ভাঙনের মুখে রয়েছে। বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবলু মিয়া বলেন, বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন ব্রহ্মপুত্রসহ তিনটি নদী দ্বারা বেষ্টিত। নদী গুলোর ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে একটি মাদ্রাসা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মসজিদ। যা সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে নদী গর্ভ বিলীন হতে পারে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মো. ময়দুল ইসলাম র‌নি বলেন, উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান। এছাড়াও কোথাও ভাঙ্গন দেখা দিলে বরাদ্দ প্রাপ্তির মাধ্যমে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।