1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ; হত্যার হুমকি রাবি ছাত্রলীগ নেতার সুপ্রীমকোর্ট জাদুঘরে স্থান পেয়েছে শিশু জাওয়াদের আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্ত্রীকে লাঠির আঘাতে হত্যার ঘাতক স্বীকারোক্তি দিয়েছে পাথরঘাটা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর শোকজ নির্বাচনের শেষ মূহূর্তে মনোহরদীতে চলছে ঘোড়া মার্কা প্রতীকের বিরামহীন প্রচারণা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাল পাসপোর্টধারী হলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রাজশাহীর কৃতী সন্তান মার্কিন পরমাণু বিজ্ঞানী আমির উজ্জামান টুটুল বাবার সামনে ছেলে খুন খুনিদের ফাঁসি দাবী করছে এলাকাবাসী কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম বাস দূর্ঘটনায় নিহত ০৫, আহত ১৫ জন পাইকগাছায় এলজিআরডি এর জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনায় মেতে উঠেছে দখলবাজরা ২য় ধাপে নিয়ামতপুর উপজেলায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪

মধ্যনগর সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ও চোরাকারবারিরা

মোঃ মিঠু মিয়া
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ২২ বার পড়া হয়েছে
ভারতের মেঘালয় পাহাড়ঘেঁষা সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর  সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে  চোরাকারবারি সিন্ডিকেট।
রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি রাতে চোরা কারবারিরা সীমান্তের কাঁটাতার  অতিক্রম করে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু, মহিষ, চিনি, বিভিন্ন মাদকদ্রব্য, কসমেটিকস, শাড়ি কাপড়, কাঁচা সুপারি, চা পাতাসহ   বিভিন্ন পণ্য দেদারসে আমদানি করছে।
অন্যদিকে  এই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সুপারি, ছোলাবুট, শুকনো সুপারি, পটের দুধ, মটরশুটি ইত্যাদি পণ্য ভারতে পাচার হচ্ছে।
এই সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রটি  বিজিবিক  ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে এসব চোরাই পণ্য পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
 স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কালোবারিদের  বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই নিরাপদে চোরাই পণ্য দেশে দেদারসে প্রবেশ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের আন্তরপুর গ্রাম, মহেষখলা, কাইটাকোনা, কড়ইবাড়ী, গুলগাঁও, রূপনগর ও কান্দাপাড়া, বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র প্রকাশ্যে এসব পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।উপজেলার মহেষখলা, কাইটাকোনা, কড়ইবাড়ী (কড়ই চড়া), আমতলা, ঘিলাগড়া, বাঙ্গালভিটা সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার এসব ভারতীয় পণ্য ঢুকছে বাংলাদেশে আর বাংলাদেশি পণ্য পাচার হচ্ছে ভারতে। এসব চোরাকারবার রাতে ও দিনেও চলছে প্রতিনিয়ত। এককথায় চোরা কারবারিদের স্বর্গরাজ্য এখন মধ্যনগর সীমান্ত। প্রতি রাতেই কোটি কোটি টাকার গরু ও মহিষ চোরাই পথে ভারত থেকে আসছে। এসব গরু ও মহিষ রাতে এমনকি দিনের বেলায় প্রকাশ্যে পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে উপজেলার মহিষখলা হতে মধ্যনগর জেলা রাস্তা দিয়ে চোরাচালানের হাজার হাজার গরু, মহিষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এবং সুপারিসহ বিভিন্ন দ্রব্য ভারতে পাচারের জন্য শত শত সেলু ইঞ্জিনচালিত ট্রলি ওই রাস্তায় চলাচল করে। এতেকরে সন্ধ্যার পরে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন ও জনচলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গবাদিপশুর হাটের ইজারাদাররা। স্থানীয়ভাবে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের কতিপয় রাজনৈতিক নেতারাও চোরাচালান সিন্ডিকেটকে মদত দিচ্ছে বলে জানা গেছে।অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, উপজেলা প্রসাশন, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় কিছু নামধারি সাংবাদিক  টাকার ভাগ ভাটোয়ারা পাচ্ছেন।
সূত্র জানায়, চোরাচালানের মাধ্যমে আসা পণ্যের মূল্য হুন্ডির মাধ্যমে চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। তাদের মাধ্যমেই দুই দেশের চোরাকারবারিরা লেনদেন করে থাকে। চিনি, গরুর জন্য বাংলাদেশের চোরাকারবারিরা ভারতে অগ্রিম টাকাও পাঠিয়ে থাকে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করে। পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর বাজারের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট জনৈক হীরার মাধ্যমে এসব টাকা ট্রানজেকশন হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। টাকা পাওয়ার পর চোরাচালান সিন্ডিকেটের ভারতীয় সদস্যরা নির্দিষ্ট পণ্য বাংলাদেশে পাঠিয়ে থাকে। বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাই পণ্য প্রবেশের পরই এর দায়িত্ব নেয় এ দেশীয় সদস্যরা। চোরাচালানের গরু, মহিষ এ দেশে প্রবেশের পরেই স্থানীয় একাধিক পশুর হাটে প্রতিটি গরুর বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করে ক্রয়-বিক্রির চালান বা রশিদ (স্থানীয় ভাষায় একে ‘ছুট’ বলা হয়) তৈরি করা হয়। এরপর এসব গরু রাতে-দিনে পাচার হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। তবে পুলিশের মতে, ওই রশিদ থাকায় চোরাচালানের গরু আটক করা যায় না।
এদিকে মধ্যনগর সীমান্তে  চোরাকারবার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ। অবৈধ ব্যবসা দেশের অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানান তারা। সীমান্তে চোরাচালন বন্ধে সরকারের তৎপরতা কামনা করছেন তারা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কালোবাজারিরা জনান, ইউএনও, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় কিছু  সাংবাদিকে টাকা না দিলে আমাদের মালামাল আটক করে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় তাই বাধ্য হয়ে তাদেরকে টাকা দিতে হয়।মধ্যনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি  কুতুব উদ্দিন তালুকদার বলেন,  মধ্যনগর সীমান্তে এখন চোরাকারবারিদের জোন হিসাব  পরিণত হয়েছে।
 আগে এমনটা ছিলনা। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো এই ব্যবসার সাথে আমাদের তরুণ ছেলে ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা  যুক্ত হয়ে পড়ছে। এটি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। চোরাচালান বন্ধের জন্য সরকারের  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
এ বিষয়ে মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, আমরা চোরাচালান প্রতিরোধে মাঠে তৎপর রয়েছি। গত কয়েকদিন আগে আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারিরা চোরাচালানে বেপরোয়া হয়ে উঠলে আমরা তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করার চেষ্ট করেছি।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমাকার সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায়  বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রাজন কুমার দাস বলেন, চোরাচালান বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। চোরাচালানের সাথে কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com