ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজে জনদুর্ভোগ – দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।বরগুনা জেলার ৩ নং আঠারগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিস সংলগ্ন একটি ব্রিজ বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের অভাবে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন শত শত মানুষ—বিশেষ করে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, নারী ও বৃদ্ধ—এই ব্রিজ ব্যবহার করে পারাপার হচ্ছেন।
ব্রিজটির নিচের কাঠামো ও রেলিং ভেঙে গেছে, কোথাও কোথাও ফাঁক দেখা যাচ্ছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। উত্তর সোনাখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের আলগী গ্রামের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে।
ব্রিজটি স্থানীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ এই ব্রিজ দিয়ে পারাপার হন। তবে বর্তমানে ব্রিজটির কাঠামো ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছে—কাঠের পাটাতন ও রেলিং ভেঙে গেছে, কোথাও আবার বড় ফাঁক তৈরি হয়েছে, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটির সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একবার বালু ও সিমেন্ট ভর্তি ট্রলি গাড়িসহ ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে নদীতে। গাড়ি চালক প্রাণে বেঁচে গেলেও ব্রিজটি মাঝখান দিয়ে ভেঙ্গে যায়।এলাকাবাসীর ভাষ্য মতে, একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এমতাবস্থায়, তারা দ্রুত এই ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন, যাতে এলাকাবাসী নিরাপদে চলাচল করতে পারেন এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা দূর হয়।
বেহাল ব্রিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার, সংস্কারের দাবিতে এলাকাবাসীর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ:
ব্রিজটি ব্যবহার করে প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী উত্তর সোনাখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাতায়াত করেন। পাটাতনের ফাঁক গলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অভিভাবকরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকেন—কখন যে দুর্ঘটনা ঘটে যায়, বলা যায় না।
অবহেলায় সংস্কার হয়নি:
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্রিজটির দুরবস্থার কথা একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে কর্তৃপক্ষ নড়ে বসবে না।
ব্রিজটির কংক্রিট ও রেলিং বহু আগেই ভেঙে গেছে। বর্তমানে শুধুমাত্র কিছু কাঠের চালি (পাটাতন) বিছিয়ে রাখার মাধ্যমে লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। অনেক জায়গায় সেই চালিগুলো নড়বড়ে, পচে গেছে বা একেবারে পড়ে গেছে, যা যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
অভিযোগ আছে, কিন্তু ব্যবস্থা নেই:
বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। “আমরা একেবারে যেন অবহেলিত, এই ব্রিজ ভাঙলে একমাত্র বিকল্প হলো দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল, যেটা সম্ভব না,” বলছেন এলাকাবাসী।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,
“এটা আর ঝুঁকি না, এটা নিশ্চিত দুর্ঘটনা—শুধু কখন ঘটবে, সেটা সময়ের ব্যাপার।”
ব্রিজের নিচে পানির গভীরতা থাকায় ভেঙ্গে পড়লে প্রাণহানির ঝুঁকি রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন এলাকাবাসী। আশপাশের কোনো বিকল্প রাস্তা না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের কারও কোনো সাড়া না পাওয়া গেলেও এলাকাবাসী আশা করছেন, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের মাধ্যমে এই সমস্যাটি উচ্চপর্যায়ে পৌঁছাবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।