মেস ভাড়া না পেয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছয় ছাত্রীকে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ৪ ঘণ্টা তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকার পর অবশেষে ওই ছাত্রীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়।
এরপর পুলিশ এসে বাড়িওয়ালার কাছ থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় ওই ছাত্রীদের উদ্ধার করেন। কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুর এলাকায় মঙ্গলবার (২ জুন) ঘটনাটি ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় বুধবার (৩ জুন)। এ নিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে সমালোচনা।
ওই ৬ ছাত্রী অভিযোগ করে জানান, তারা নগরীর ধর্মপুরের জাহানারা মঞ্জিলে থাকেন। তারা ভিক্টোরিয়া কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। প্রায় তিন মাস ধরে তারা মেসে থাকছেন না। আর এখন তাদের টিউশনিও বন্ধ। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার ওই ছয়জন মেসে যান। এ সময় তারা রুমে প্রবেশের পর মূল গেটে বাড়িওয়ালা জানাহারা বেগম তালা লাগিয়ে দেন।
তারা বলেন, আমরা বলেছি, যেহেতু মেসে ছিলাম না, টিউশনিও নেই এখন তাই অর্ধেক ভাড়া দেব। কিন্তু বাড়িওয়ালা বলেছেন পুরো টাকা দিতে হবে। আমরা বলেছি এখন টাকা সঙ্গে নেই, মালামাল থাকুক। আমরা মে মাস পর্যন্ত টাকা দিয়ে, আসবাবপত্র নেব। একইসঙ্গে জুনের ভাড়াও দাবি করেন বাড়িওয়ালা। এরপর তিনি গেটে তালা লাগিয়ে আমাদের চার ঘণ্টার মতো আটকিয়ে রাখেন। পরে আমরা বাধ্য হয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করি। অবশেষে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া জানান, বিশ্ব এখন মহা সংকটে আছে। এ সময়ে সবাই সবাইকে ছাড় দিতে হবে। এখানে যারা পড়ে, বেশিরভাগ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের আংশিক ভাড়া মওকুফ করা দরকার।
তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত জাহানারা মঞ্জিলের মালিক জানাহারা বেগম বলেন, ‘ওরা আমার মেয়ের মতো। আন্তরিকতার মধ্যে তাদের বলেছি, ভাড়া না দিলে তালা খুলব না। মেয়েরা আমার বাড়িতে পুলিশ কল দিয়ে এনেছে। ভাড়ার টাকায় বাসার বিভিন্ন বিল দেই। সরকার যদি গ্যাস, কারেন্ট, পানি বিল মওকুফ করে, আমিও তাদের মওকুফ করতে পারতাম। আর তাদের কাছে আমি তিন/চার মাসের ভাড়া পাই। পূর্বেও এমন করে বহু ভাড়াটিয়া টাকা না দিয়ে চলে গেছে।’
বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে টিমসহ ঘটনা স্থলে যাই। গিয়ে দেখি বাসায় তালা দেওয়া। পরে মালিককে ডেকে তালা খুলে উভয়ের সঙ্গে কথা বলি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মালিক পক্ষ চায় শতভাগ ভাড়া, আর ছাত্রীরা চায় করোনাকালীন সময়ে অর্ধেক টাকা দেওয়ার জন্য। প্রাথমিকভাবে বিষয়টির সমাধান করে, ছাত্রীদের বাসা থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা করি। যেকোনো সমস্যায় উভয় পক্ষকে থানায় যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ জার্নাল/ এমএম