ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এ কথার বাস্তব প্রমান মেলে টাংগাইল গোপালপুরের কিছু গ্রামে।পৌষ মাস শুরু হতে না হতেই স্থানীয় গ্রামগুলোতে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোথাও না কোথাও লোক উৎসব ওরশ শরীফ পালন করতে দেখা যায়।টাংগাইল গোপালপুরের বেড়ীপটল, কেরামজানি,কড়িয়াটা সহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে এই উৎসবটি বেশি করে পালন করতে দেখা যায়।স্থানীয়ভাবে এখানে হিন্দু,মুসলিমদের একত্রে বসবাস।এলাকার অধিকাংশ লোকজনই বিভিন্ন তরিকার পীরের শিষ্য।তারা যার যার পীরের নির্দেশমত ওরশ পালন করে।
এই উৎসবগুলোতে সকলকেই অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।সরেজমিনে কয়েকটি ওরশে গিয়ে দেখা যায় এখানে অনুষ্ঠানটি মুলত ৪টা পর্বে বিভক্ত ১ম পর্বে মিলাদ মাহফিল ও ধর্মীয় ওয়াজ, ২য় পর্বে বিভিন্ন বাউল ও ফকিরি গান, ৩য় পর্বে জিকির,৪র্থ পর্বে তবারক বিতরণ। তবারক বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হলেও এসমস্ত ওরশের মুল আকর্ষণ হচ্ছে ২য় পর্বে।যেখানে এলাকার বিভিন্ন ফকির,বাউল ও পাগলদের ফকিরি গান।যেসমস্ত গানের মাধ্যমে উঠে আসে ইহলৌকিক ও পরলৌকিক চিন্তা চেতনা।এরকম একটি ওরশ শরীফ পালিত হল বেড়ীপটল গ্রামের জসিম মন্ডলের বাড়িতে।যার মুল উদ্যোক্তা জসিম মন্ডল নিজেই।উনি চিশতীয়া তরিকার অনুসরী। এই ওরশ গুলো দীর্ঘ দিন যাবত বেড়ীপটল গ্রামে পরম্পরায় পালিত হয়ে আসছে।এ অনুষ্ঠানের সকল দিক ভাল লাগলেও ছোট্র একটা নেগেটিভ দিক হচ্ছে ওরশের দিন বিকেল থেকেই এ গ্রামের আশেপাশে এলাকার বিপদগামীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তবে স্থানীয় প্রশাসনের সচেতনতায় এর প্রতিকারও হচ্ছে। গ্রামের লোকজন খুবই আশাবাদী যে যেহেতু লোক পরম্পরায় এ অনুষ্ঠানগুলো এই গ্রামে পালন হয়ে আসছে তাই স্থানীয় প্রশাসন সুশৃঙ্খলভাবে তদারকির মাধ্যমে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে দিলে বাংলার এই লোক উৎসব গুলো স্ব মহিমায় টিকে থাকবে অনন্তকাল।