টানা কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা আর তীব্র শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত উত্তরের জেলা নীলফামারীর জনজীবন। এরই মধ্যে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বোরো ধানের চারা। চারাগুলো ফ্যাকাশে লালচে হয়ে যাচ্ছে। ফলে নীলফামারীর কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বোরোর বীজতলায় কোথাও হলুদ, কোথাও লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। অনেক জায়গায় গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।কৃষি বিভাগ বলছে, ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়া তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত বীজতলা সেরে উঠবে।
নীলফামারী জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের কৃষক মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমার বোরো ধানের বীজের যে পাতা কালো ছিল। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে লালচে হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ধানের চারা বীজতলা থেকে তুলে জমিতে রোপণ করতে পারব কিনা সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’একই ইউনিয়নের রামগঞ্জ এলাকার কৃষক সেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিনের তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় বীজতলার অনেকাংশ নষ্টের পথে। বীজতলায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ইনজুরি। চারাগুলো হলদে হয়ে গেছে। ওষুধ ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।’পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের উত্তরাশশী মিস্ত্রি পাড়ার কৃষক মোস্তাকিন আলী বলেন, ‘বোরো বীজতলার অর্ধেকই কুয়াশায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। এখনো জমি আবাদ শুরু করতে পারিনি। ঘন কুয়াশায় আমার মতো অনেকের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় ৮১ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।’নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস. এম. আবু বকর সাইফুল ইসলাম সময়ের কন্ঠস্বর’কে বলেন, ‘তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কারণে কিছু কিছু বীজতলায় লালচে ভাব চলে এসেছিল। সরেজমিন বীজতলা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে আমাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ রোদ দেখা যাচ্ছে, যার কারনে ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই। যেসব বীজতলায় লালচে ভাব এসেছিল সেগুলোয় সঠিকভাবে সার ও বালাইনাশক স্প্রে এবং জমে থাকা পানি বের করে দিতে হবে। তাহলে সেগুলো আবারো ঠিক হয়ে যাবে।’