ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি কন্যার সোমেশ্বরী নদীকে ঘিরেই নেত্রকোনার দুর্গাপুর। ব্যবসা-বাণিজ্য সহ প্রাণ প্রকৃতি সবকিছুই এই নদীকে ঘিরেই। তবে নদী পারাপারে আজও স্থায়ী কোন ব্রিজ না হয় দুর্ভোগ রয়েই গেছে এই অঞ্চলের লাখো মানুষের ভাগ্যে।
একটি পৌর সভা আর সাতটি ইউনিয়নের গঠিত দুর্গাপুর উপজেলা। এর মাঝে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের পুরোটা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পর্যটন সম্ভাবনা দোয়ার। তবে নদী পারাপার নিয়ে স্থায়ী কোন সমাধান অভাবে আজও এগুলো আলো মুখ দেখেনি।
প্রতিদিন দুর্গাপুরের হাজারো মানুষ সোমেশ্বরীর এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করেন। শিক্ষা,স্বাস্থ্য,চিকিৎসা কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য এসবকিছুর বেশিরভাগই সোমেশ্বরীর এপারে অর্থাৎ দুর্গাপুর পৌর শহরে।
স্বাধীনতার পর থেকে আজ-অব্দি নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা হচ্ছে নৌকা। শীতকালে শুকনোর মৌসুমে নদী শুকিয়ে নালার মতো প্রবাহিত অবহিত হয় পারাপারে ও থাকে দুর্ভোগ। তেমনি বর্ষায় খরস্রোতা সোমেশ্বরীর ভয়াবহ রূপে নদী পারাপারে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ।
গেল কয়েক বছর ধরে শুকনো মৌসুমে সোমেশ্বরীর বুকে কাট আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী ব্রিজ। এসব অস্থায়ী কাঠের ব্রিজে চলাচলে কিছুটা দুর্ভোগ কমলেও টোল আদায় নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ।
বিরিশিরি ও শিবগঞ্জ কাঠের ব্রীজের নির্ধারিত টোলের থেকেও বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া রয়েছে।
বাড়তি এই টাকা কেউ দিতে না চাইলে চরম দুর্ব্যবহার সহ জোরপূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের চেষ্টাও চলে।
একাধিক ভুক্তভোগীদের দাবি কাঠের এই ব্রীজগুলোতে টোল আদায়ের কর্মী প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় রীতিমতো চাঁদাবাজী শুরু করেছে। এযেন মগের মুল্লুক, দেখার কেউ নেই। নদী পারাপার করা লোকজনের দাবি নদীর ঘাটে টোল আদায়ের দ্বায়িত্বে থাকার নামে বিশেষ ধরনের কিছু চাঁদাবাজদের বসিয়ে রাখা হয় ওরা দিনের বেলায় কিছুটা সহনশীল হলেও রাত হলেই আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।এমন চলতে থাকলে এই এলাকাতে পর্যটক আসা দিনে দিনে হ্রাস পাবে বলেও জানান ভুক্তভোগীদের একাংশ। জনদুর্ভোগ ঠেকাতে এবিষয়ে তারা কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিজয়পুর চীনামাটির পাহাড়গামী কয়েকজন ভুক্তভোগী পর্যটক বলেন, সকালে পাহাড়ে যাওয়ার সময় বিরিশিরি নদীর কাঠের এই ব্রীজে টাকা তোলার দ্বায়িত্বে থাকা লোকজন আমাদের তিনজনের নিকট থেকে হোন্ডা সহ যাত্রী টোল ২০টাকা করে ৮০টাকা আদায় করতে চাইলে আমরা এত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাদের উপর তারা এক প্রকার চরাউ হয়ে উঠে এবং ধাক্কা ধাক্কি শুরু করে তখন তাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও বাজে আচরণের ফলে আমরা নিজেদের মানসম্মানের ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হয়ে চলে যাই, এখনো আসার সময় শিবগঞ্জ ঘাটেও অতিরিক্ত টাকা তাদের দিয়ে পার হয়েছি।
জানা যায়,বিভিন্ন গাড়ি, রিক্সা, ভ্যান, থেকে ১০০/২০০, অটো, সিএনজি থেকে ২০০/৩০০ এবং প্রাইভেট কার, মাইক্রো থেকে ৫০০/১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করাহয় এই দুই ব্রীজের টোল ছাউনিতে।
এবিষয়ে টোল আদায়ে কর্মরত লোকদের জিজ্ঞেস করলে তারা অভিযোগ টিকে মিথ্যা কথা বলে অস্বীকার করেন।