ফরিদগঞ্জে গ্রাম্য সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৯ মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইকবাল মুন্সী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এদিকে সন্তানকে ফিরে পেতে থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর দুই সপ্তাহেও সাড়া পাননি বলে জানান শিশুটির মা।গত ৪ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ থানায় করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে ফরিদগঞ্জের বাসারা গ্রামের আব্বাস মুন্সির ছেলে ইকবাল মুন্সির সঙ্গে একই উপজেলার পূর্ব দায়চারা গ্রামের মৃত শাহ আলম মোল্লার মেয়ে নয়ন বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন অজুহাতে স্ত্রীকে একাধিকবার মারধর করেন ইকবাল। এরই মধ্যে তাঁদের সংসারে কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে বিগত বছরের ১৬ ডিসেম্বর গ্রাম্য সালিসি বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নয়ন বেগমকে তালাক দিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখার অভিযোগ রয়েছে। পরে জোর করে ৯ মাসের শিশুসন্তানকে মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ইকবাল মুন্সির পরিবারের লোকজন।
নয়ন বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় মারধর করত। সুখের আশায় সালিসদের কাছে বিচার দিলেও উল্টো আমাকে তালাক দিতে বাধ্য করে। এমনকি তারা আমার সন্তানকেই ছিনিয়ে নেয়। পরে জেনেছি, আমার সন্তানকে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ওয়ারুক গ্রামে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় আমার স্বামী। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে চাই।’
এ বিষয়ে নয়ন বেগমের স্বামী ইকবাল মুন্সি বলেন, ‘স্ত্রীর সঙ্গে সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে তালাক হয়ে গেছে। আমাদের ইউপি সদস্য সুমন, মাতবর আশু, জামাল, আবু তাহের, ফারুক হোসেন ও বাবুলের উপস্থিতিতে তালাকের পর সন্তানকে আমার জিম্মায় দেওয়া হয়। সন্তান বিক্রির যে অভিযোগ থানায় করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। আমি সম্পর্কে এক খালাতো বোনের কাছে সন্তানকে লালন পালন করতে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সুমন মিয়া বলেন, ‘শুনেছি শিশুটিকে পালক দেওয়া হয়েছে। বিক্রির বিষয়ে আমি জানি না।’
স্থানীয় সুবিদপুর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রথম সালিসে আমি থাকলেও পরের বৈঠকে ছিলাম না। শিশুটির মা শিশুটিকে নিবে না বলায় তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জেনেছি। পরে কী হয়েছে, আমি জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহফুজ বলেন, ‘শিশুটির বাবাকে সংবাদ দিয়েছি আসার জন্য। তিনি এলে শিশুটিকে উদ্ধার করা হবে।।