বরগুনা পুলিশ সুপারকে জমি দখল করবে না বলে মুচলেকা দিয়েও কৃষক আব্দুল মন্নান আকনের জমির ধান কেটে নিয়েছে ভুমি দস্যুরা। ধান নিয়ে খ্যান্ত হয়নি তারা পুলিশকে জানালে কৃষককে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে গত দুই দিন কৃষক ঘর থেকে বের হয়নি। বুধবার দুপুরে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এমন অভিযোগ করেছেন কৃষক আব্দুল মন্নান আকন। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোমবার দুপুরে।
জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের আব্দুল গাফফার এ বছর ৩ জুলাই মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে ২৬ শতাংশ জমি দলিল মুলে ক্রয় করেন। ওই জমিতে তার বাবা আব্দুল মান্নান আকন আমন ধান রোপন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে জমিতে ধান রোপনের সময় স্থানীয় ভুমি দস্যু রাসেল প্যাদা, মাহতাব প্যাদা, আলতাফ খাঁন, সামসুল হক মৃধা ও মনির আকন জমির মালিক আব্দুল গাফফারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। কিন্তু তিনি তাদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করেন। একে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে রোপনকৃত জমি জোরপুর্বক দখল করে নেয়। এ ঘটনায় আব্দুল মন্নান আকন গত ২ অক্টোবর বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়। পুলিশ সুপার তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভুমি দস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। পরে ভুমি দস্যুরা বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে জমি দখল করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পান। কিন্তু পুলিশ সুপারকে দেয়া ওই মুচলেকা উপেক্ষা করে রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ ১০-১২ ভুমি দস্যু গত সোমবার দুপুরে হার্বেস্টার মেশিন দিয়ে ওই জমির ধান কেটে নিয়ে যায় এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে কৃষক মন্নান আকনকে তারা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাদের ভয়ে তিনি গত দুইদিন বাড়ী থেকে বের হয়নি। বুধবার দুপুরে কৃষক মন্নান আকন আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুৃক কয়েকজন বলেন, রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদারসহ তাদের সহযোগীরা হার্বেস্টার মেশিন দিয়ে প্রকাশ্যে ধান কেটে নিয়ে গেছেন।
কৃষক আব্দুল মন্নান আকন বলেন, পুলিশ সুপারকে মুচলেকা দিয়েও রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ ১০-১২ জন ভুমি দস্যু আমার জমির ধান কেটে নিয়েছে। তারা ধান কেটে নিয়েও খ্যান্ত হয়নি এ বিষয়ে পুলিশকে জানালে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। তাদের ভয়ে আমি গত দুইদিন ঘর থেকে বের হয়নি। তিনি আরো বলেন, আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাসেল প্যাদা ও মাহতাব প্যাদাসহ তার সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে মাহতাব প্যাদা (০১৭৩৯৭৫৫৪৭০) ধান কেটে নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই জমি আমার ভাই রাসেল চাষাবাদ করেছে। স্থানীয়ভাবে মিমাংশায় চাষাবাদের খরচ বাবদ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই টাকা না দেয়ায় জমির একাংশের ধান কেটে আনা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক অভিযোগ দিলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।