জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় পথ শিশু ও ছিন্নমূল অসহায় রোজাদারদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাইটস ফাউন্ডেশনের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৭ মার্চ) গবির তৃতীয় লিঙ্গের নিরাপত্তাকর্মী সহ ২০০জন সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় আশ্রয়হীন, শিক্ষাবঞ্চিত পথ শিশুদের সাথে ভাগাভাগি করে ইফতার খেয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা।
স্মৃতিসৌধে পেটের দায়ে ফুল বিক্রি করে ৫বছর বয়সী হোসেন নামের এক এতিম শিশু। সে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে খাবার খেয়ে শুকরিয়া প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাই আপুরা আমাগো লাইগগা বই কাপড় দেয়, ছবি আঁকা শেখায় আজকে ভাই আমাকে খাওয়াই দেছে, আমার মেলা দিন পর বাপের হাতের খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেছে, বাপ বাঁইচা থাকতে আমাকে এমনে খাওয়াই দিতো।
স্মৃতিসৌধের সামনে দাঁড়িয়ে বাচ্চাদের বেলুন আর ফুল বিক্রেতা বিলকিস খাতুন বলেন, আমার ছেলে গো ভাইরা পড়ায় প্রত্যেক সপ্তায়, মানষে যেখানে লাত্থিঘোড়া মারে তারা সেখানে আদর করে পড়ায়, আমার টিউমার চিকিৎসাও তারা করবে।
পথ শিশুদের সঙ্গে ইফতার করে সংগঠনের উচ্ছ্বাসিত সদস্যরা বলেন, এই বাচ্চাদের হাসিই আমাদের অনুপ্রেরণা। আমাদের স্বপ্ন এই ছোট্ট পথ শিশুদের জীবনমান পরিবর্তন করে দেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে। আমরা গত ১বছর ধরে স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন স্থানে তাদের ক্লাস নিয়েছি, ওদের রমজানে ঈদে-শীতে কাপড়, বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা সরঞ্জামাদি দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। তবে ইনশাআল্লাহ অতিদ্রুতই আমরা স্থায়ী স্কুল প্রতিষ্ঠা করে তাদের পথ সুগম করবো।
সন্ধ্যায় ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলে শিশুদের নিয়ে একসঙ্গে ইফতার করে অনেক সুখ-দুঃখ ও খাবার ভাগাভাগি করে নেন রাইটস ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির সময় ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি মূলত অসহায় এতিম ও পথ শিশুদের শিক্ষা, আহার ও যেকোনো ধরনের সেবা দানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় যার অংশ হিসেবে স্মৃতিসৌধে গত ১বছর যাবৎ প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষা উপকরণ দিয়ে আসছে সংগঠনটি। এছাড়া তারা অসহায় কর্মহীন পরিবার ও নারীদের স্বাবলম্বী করতে দিচ্ছে সেলাই,ফ্রিল্যান্সিং সহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ।