কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ৯টি বাড়িতে একযোগে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে এছাড়া একটি দোকান এবং একটি ব্রয়লার ফার্মেও হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাই হয়েছে একটি মোটরসাইকেল ও মোটর। হামলার সময়ে উক্ত বাড়িঘর সমূহের বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙচুর করে খসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ভেড়ামারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।
জানা গেছে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদের ইমামের বকেয়া বেতন পরিশোধকে কেন্দ্র করে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারির বিপক্ষে অবস্থান নেয় একটি গ্রুপ। জুম্মার নামাজ চলাকালীন সময়েই বাগ বিতন্ডার সূত্রপাত ঘটে। নামাজ শেষে মফিজ উদ্দিন , রিফাজউদ্দিন উজ্জ্বল হোসেন, কালু , আফফান , বিশু , শুকুর, রিফা, উজ্জ্বল সহ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে অজ্ঞাত শত খানেক হামলাকারী একযোগে মসজিদ প্রাঙ্গনে কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীয়ত উল্লাহ ও তার লোকজনের উপরে হামলা করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে তারা শরীয়তুল্লাহর বাড়ির ভেতরে অবস্থান নিলে সন্ত্রাসীরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় পাশাপাশি টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। হামলার সময় রক্ষা পায়নি মহিলারাও। এরপরে একের পর এক অন্যান্য বাড়িগুলোতে হামলা হয় এবং একই কায়দায় লুটপাট করা হয়। হামলাকারীরা উগ্র মূর্তি ধারণ করে হাতে লোহার রড রামদা হাতুড়ি হাত কুড়াল হাসুয়া এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে খোশবার আলী, শরীয়ত আলী, মারফত আলী, সুমন আলী এবং নারীসহ মোট ২৫ জনকে গুরুতরভাবে জখম করে। ২৫ জনের মধ্যে ৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে খোশবার আলীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক মর্মে জানা গেছে। হামলাকারীরা বদরের একটি আরটিআর মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। বদরের দোকানে হামলা করে এবং লুটপাট করে ও ফ্রিজ ভেঙে ফেলে। বদরের নলকূপ উপড়ে ফেলে এবং মোটর নিয়ে যায়। এছাড়া বদরের মুরগির খামারে হামলা করে ১৩০০ মুরগী নিয়ে যায়। এক একটি ব্রয়লার মুরগির ওজন তিন থেকে চার কেজি। এ ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে ভেড়ামারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনার বিষয়ে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শহিদুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন এ ব্যাপারে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতিমধ্যেই তিনি একজন কর্মকর্তাকে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিন্তু তার আগে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে তিনি শান্ত থাকবার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।